খাশোগির মৃত্যুর আগে ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার আড়ি পাতে তার স্ত্রীর ফোনে
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ফরেনসিক বিশ্লেষণে জানা গেছে, সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, এমন দুই নারীকে টার্গেট করেছিল পেগাসাস। তার মৃত্যুর আগে আড়ি পাতা হয় খাশোগির স্ত্রী হানান এল-আত্তারের ফোনে। ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর খাশোগিকে হত্যার পরদিন তার বাগদত্তা হাতিজ চেঙ্গিজের ফোনেও আড়ি পাতা হয়।
তাছাড়াও খাশোগি হত্যাকাণ্ড তদন্তের সাথে সম্পৃক্ত দুই তুর্কি কর্মকর্তার নামও আছে এ তালিকায়।
খাশোগিকে হত্যা করার কয়েক মাস আগে তার স্ত্রী এল-আত্তারের ফোনে আড়ি পাতা হয় পেগাসাস ব্যবহার করে। অবশ্য ওই হ্যাক সফল হয়েছিল কিনা, তা নিশ্চিতভাবে জানতে পারেনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
খাশোগির মরদেহ কোথায় ফেলা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। কারণ যুবরাজ সালমানের কঠোর সমালোচক ছিলেন খাশোগি। বিভিন্ন তদন্তে উঠে এসেছে, তাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ।
জানা গেছে, খাশোগির স্ত্রী হানান এল-আত্তারের অ্যান্ড্রয়েড ফোন টার্গেট হয়েছিল পেগাসাসের। ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট এল-আত্তারের ফোনটি হ্যাক করা হয়েছিল পেগাসাস ব্যবহারকারী একজনের ফোন থেকেই। এল-আত্তারের বোন পরিচয় দিয়ে মেসেজ পাঠানো হয়েছিল তার ফোনে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এল-আত্তার বলেছেন, ওই ঘটনার সময় খাশোগির সঙ্গে তার কথা হতো। মেসেজ চালাচালি হতো। নজরদারি এড়ানোর জন্য খাশোগি তাকে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করতে বলতেন।
খাশোগির মৃত্যুর পর পেগাসাসের লক্ষ্যবস্তু হন তার বাগদত্তা হাতিজ। খাশোগিকে হত্যার চার দিনের মাথায় হ্যাক করা হয় হাতিজের আইফোন। তবে তার ফোন থেকে কোনো তথ্য চুরি করা হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।
খাশোগি খুন হওয়ার পর ওলট-পালট হয়ে গেছে এল-আত্তার ও হাতিজের জীবন। খাশোগির সঙ্গে প্রেমে জড়ানোর পর থেকেই শুরু হয় হাতিজের ঝুঁকিপূর্ণ জীবন। সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ তাকে বিমানবন্দরে আটক করে, বাজেয়াপ্ত করা হয় তার ফোন। তিনি এখন ওয়াশিংটনে আত্মগোপনে আছেন। খাশোগির সঙ্গে পরিচয়ের আগে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পারস্য উপসাগরীয় বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করতেন তিনি। এখন তার দিন কাটছে আতঙ্কে আর অনিশ্চয়তায়।
- সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট