দূষিত বায়ু বিশোধনের জন্য দিল্লিতে বসল ভারতের প্রথম ‘স্মগ টাওয়ার’
গতকাল সোমবার ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে চালু হয়েছে দেশটির প্রথম 'স্মগ টাওয়ার'। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানীর বাতাস বিশোধন করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা এর কার্যকারিতা সম্পর্কে সন্দিহান।
৪০টি বিশালাকৃতির ফ্যান ও ৫ হাজার ফিল্টারের সাহায্যে ৮২ ফুট উঁচু টাওয়ারটি উপর থেকে দূষিত বাতাস শুষে নেয়। তারপর সেই বাতাস ফিল্টার করে নিচ থেকে পাম্প করে। দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর অনুসারে, স্মগ টাওয়ারটি প্রায় ০.৪ বর্গমাইল ব্যাসার্ধের এলাকাজুড়ে প্রতি সেকেন্ডে ৩৫ হাজার কিউবিক ফুট বাতাস পরিশোধন করতে সক্ষম। এই প্রযুক্তি আমেরিকা থেকে আমদানি করা হয়েছে।
দিল্লির কোন্নাট প্লেসে এই স্মগ টাওয়ারের উদ্বোধন করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, পরিবেশ দূষণ রোধে ভারতে প্রথম স্মগ টাওয়ার বসানো হয়েছে। টাওয়ারটি বানাতে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ কোটি রুপি।
গত তিন বছর ধরেই পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত রাজধানীর তকমা পেয়ে আসছে দিল্লি। ২০১৯ সালে কেজরিওয়াল মাত্রাতিরিক্ত দূষণের জন্য দিল্লিকে 'গ্যাস চেম্বার' বলেছিলেন। ল্যানসেটের ২০২০ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৯ সালে দিল্লিতে বায়ুদূষণের কারণে প্রায় ১৭ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
দিল্লিতে প্রতি বছর শীতকালে বায়ুদূষণের ফলে তীব্র সমস্যা দেখা দেয়। ইলেকট্রিক জেনারেটরের ব্যবহারে বন্ধ, গাড়ির জোড়-বিজোড় নীতি, নির্মাণকাজে লাগাম টানার মতো একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে শহরটির বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য। আইকিউএয়ারের মতে, দিল্লির বায়ুদূষণ সমস্যা সমাধানের জন্য কমপক্ষে ২১৩টি স্মগ টাওয়ার বসাতে হবে।
দিল্লিতে স্মগ টাওয়ারটি বসানো হয়েছে পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে। এই টাওয়ার কাঙ্ক্ষিত ফল দিতে পারলে আগামীতে আরও টাওয়ার বসানো হবে।
কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, স্মগ টাওয়ার বসিয়ে আসল সমস্যার সমাধান হবে না, কেবল টাকাই নষ্ট হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুদূষণ সমস্যা সমাধানের জন্য সবার আগে কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে। নইলে অন্য যত পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, কোনো লাভ হবে না।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ তনুশ্রী গাঙ্গুলি বলেছেন, স্মগ টাওয়ার দূষণের মাত্রা কমাতে পারে, তার সপক্ষে বিজ্ঞানসম্মত কোনো প্রমাণ নেই।
এর আগে ২০১৮ সালে চীনের জিয়ান শহরে এরকম একটি ৩২৮ ফুট উঁচু বায়ু বিশোধক স্মগ টাওয়ার বসানো হয়েছিল। টাওয়ারটির কার্যকারিতা এখনও পর্যবেক্ষণের পর্যায়ে রয়েছে। তবে জিয়ান শহরের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রাথমিক ফলাফল বেশ আশাপ্রদ।
- সূত্র: ইনসাইডার.কম