ভারত ছাড়ার নোটিশ: বাংলাদেশি ছাত্রীর পাশে দাঁড়াল বিশ্বভারতীর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
'সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা'র অজুহাতে ভারতে পড়ুয়া বাংলাদেশের যে নারী শিক্ষার্থীকে ভারত ছাড়তে বলেছে সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তার পক্ষে দাঁড়িয়েছে তারই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আফসারা আনিকা মীম নামে ওই শিক্ষার্থী বিশ্বভারতীতে গ্রাফিক ডিজাইনে প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করেন। বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের একটি ছবি ফেসবুকে দেন বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলা থেকে পশ্চিমবঙ্গে পড়াশোনা করতে যাওয়া ওই ছাত্রী।
তারই জের ধরে আনিকাকে ১৫ দিনের মধ্যে ভারত ত্যাগের নির্দেশ দেয় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের দাবি, বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী আফসারা আনিকা মীম স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ভারতে পড়তে এসে 'সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে' ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেছেন।
নিজের ওপর নিষেধাজ্ঞার ওই বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আনিকা যখন কলকাতার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে যোগাযোগ করছিলেন, তখন তার শিক্ষকরা এই বিষয়ে আইনি প্রতিকার খুঁজতে দ্বারস্থ হয়েছেন কলকাতার সিনিয়র আইনজীবীদের।
বিশ্বভারতীর একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক দ্য টেলিগ্রাফকে জানান, 'মেয়েটি সামাজিক মাধ্যমে কিছু ছবি দিয়েছিল আর এ কারণেই তাকে দেশ ছাড়তে বলা হলো। আমরা ইতোমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি। ওকে সব ধরনের সাহায্য আমরা করব।'
কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী শামীম আহমেদ জানান, আনিকার এই বিষয়টি আইনিভাবেই লড়াই করা যাবে, কারণ সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে ওর অংশগ্রহণের কোনো প্রমাণ নেই।
বাংলাদেশি এই শিক্ষার্থীকে ভারত ছাড়ার নোটিশ দেওয়ায় সমালোচনামুখর রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
ভারতের মতো মুক্ত দেশে যেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে মধ্যস্থতার ঘোষণা দেওয়ার পরেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানানো হয়, সেখানে বাংলাদেশের মেয়ে কেন নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধের প্রতিবাদের ছবি ফেইসবুকে পোস্ট করতে পারবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বভারতীর স্টুডেন্ট ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার (এসএফআই) নেতা সোমনাথ সৌ।
তিনি বলেন, 'ওই নোটিশের মধ্য দিয়ে তার প্রতি অবিচার হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আমরা রাজনৈতিক আদর্শ নির্বিশেষে সোমবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছি। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই প্রতিবাদ করব।'