‘ভেবেছিলাম আমার বিশ্বকাপই শেষ’, ইনজুরি নিয়ে নেইমার
দুই সপ্তাহ আগে পায়ের গোড়ালিতে চোট পাওয়ার পর দল থেকে ছিটকে যান নেইমার। তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি ভেবেছিলেন তার বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে খেলতে এসে ৪-১ গোলের জয় পেয়েছে ব্রাজিল, পেনাল্টি কিকে গোলও পেয়েছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। অল্প সময়ে সেরে উঠে দলে ফিরতে পেরে ব্রাজিলিয়ান মেডিকেল টিম ও ফিজিশিয়ানদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নেইমার।
ম্যাচ শুরুর মাত্র ৩৬ মিনিটের মধ্যে প্রতিপক্ষের জালে চার গোল দেন সেলেসাওরা। দলের হয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র, নেইমার,রিচার্লিসন ও পাকুয়েতা। এরপরে বাকি সময়ে গোল না পেলেও কোরিয়ানদের বেশ চাপের মুখে রাখেন তারা। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে একটি গোল শোধ করেন পার্ক সিউঙ।
ম্যাচের ১২তম মিনিটে পেনাল্টি কিক থেকে এই বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোলটি করেন নেইমার। ম্যাচ শেষে কিংবদন্তি পেলের ছবিযুক্ত ব্যানার নিয়ে তার সুস্থতা কামনা করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানায় পুরো দল। এই সময়ে নেইমার বলেন, "এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। কিন্তু আমার কাছে পেলে এখনো সেরা খেলোয়াড়, আমি নিশ্চিত তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরবেন।"
নিজের ইনজুরি নিয়ে তিনি বলেন, "ঐ সময় আমার মাথায় অনেক চিন্তা ঘুরছিলো; আমি এই বিশ্বকাপে আবারও খেলতে পারবো কিনা সেটা নিয়ে সন্দিহান ছিলাম। কিন্তু আমার পরিবার এবং সতীর্থদের সাপোর্ট আমাকে সুস্থ করে মাঠে ফিরিয়ে এনেছে।"
গোলের পর ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের উদযাপন নিয়ে সমালোচনা হয় প্রায়ই, যদিও এই উদযাপনকে তারা নিজেদের খেলার একটা অংশ মনে করে থাকেন। গত সেপ্টেম্বরেও এই গোল উদযাপন নিয়ে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছিলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। ম্যাচ শেষে কোচ তিতে খেলোয়াড়দের গোল উদযাপন নিয়ে কথা বলেন।
অনেক সমালোচনার মধ্যেও তিতে কথা বলেছেন তার খেলোয়াড়দের পক্ষে। ম্যাচের মধ্যে তাকেও দেখা গিয়েছে রিচার্লিসনের সাথে নেচে গোল উদযাপন করতে। তিতে বলেন, "আমার দলের খেলোয়াড়েরা তরুণ। তারা সুন্দর ফুটবল উপভোগ করে এবং সেটাকে উদযাপন করে নিজেদের মতো। রিচার্লিসন আমার কাছে আসলে আমি তাকে বলেছিলাম যে, যদি তুমি নাচো তাহলে আমিও নাচবো।"
ম্যাচের শেষের অংশটুকু ছিলো অত্যন্ত আবেগীয়। ম্যাচ শেষে পেলের ছবিযুক্ত ব্যানার হাতে মাঠে আসে ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়েরা। ব্যানারের ছবিতে ১৯৭০ বিশ্বকাপের ফাইনালে একটি গোলের পর উদযাপনরত পেলেকে দেখা যায়।
ম্যাচের মধ্যে ব্রাজিল পাঁচটি পরিবর্তন আনে, শেষ দিকে এলিসনকে বদলি করে দলের তৃতীয় গোলকিপার ওয়েভারটনকে নামান তিতে; এর মাধ্যমে প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপে স্কোয়াডের ২৬ জন খেলোয়াড়কেই মাঠে নামানোর রেকর্ড গড়লো কোনো দল।
এই ম্যাচ জেতার মাধ্যমে শেষ আটে পৌঁছে গেলে ব্রাজিল, সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হবে বর্তমান রানার্সআপ দল ক্রোয়েশিয়া।