বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন কান্নায় ভেঙে পড়া মেসি
শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনা-লিওনেল মেসি সম্পর্কটা ছিন্নই হলো। কাতালান ক্লাবটিতে ২১ বছর কাটিয়ে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড এখন নতুন ক্লাবে যাওয়ার অপেক্ষায়। এর আগে রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে বার্সাকে বিদায় জানিয়েছেন মেসি। বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বার্সার সর্বকালের সেরা এই ফুটবলার।
ছোট্ট বেলায় বার্সায় নাম লেখানো, বেড়ে ওঠা, কাতালাদের হয়ে বিশ্ব ফুটবল শাসন করা, শেষ বেলার অনুভূতিসহ আর অনেক কিছু নিয়েই কথা বলেন আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর। সংবাদ সম্মেলনের বিশেষ অংশগুলো তুলে ধরা হলো।
লিওনেল মেসি
এতগুলো বছরের পর এটা আমার জন্য খুবই কঠিন। গত বছর আমি ছেড়েই দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এ বছর চাইনি। এটা আমাদের বাড়ি, বার্সেলোনাকে আমরা ভালোবাসি। ২১ বছর পর আমার স্ত্রী ও আর্জন্টাইন-কাতালান তিনটি সন্তানকে নিয়ে আমি চলে যাচ্ছি। এটা আমাদের বাড়ি, আমরা ফিরে আসব বলে আমি আমার সন্তানদের কথা দিয়েছি।
আমি কখনও বিদায় বলিনি, কারণ এমন চিন্তাই আমি কখনও করি নাই। ব্যাপারটা এভাবে হবে, আমি তা কল্পনাতেও ভাবিনি। করোনা মহামারীতে গত এক বছর ধরে আমরা দর্শকভরা মাঠে খেলতে পারিনি। প্রায় দেড় বছর ভক্তদের উল্লাস-উন্মাদনা না দেখেই পার করতে হয়েছে। এভাবেই ছেড়ে যেতে হচ্ছে। মাঠে দর্শকদের মাঝ থেকে বিদায় নিতে পারলে ভালো লাগতো।
এখানে আসার প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত এই ক্লাবকে আমি আমার সবটা উজাড় করে দিয়েছি। বিদায় বলতে হবে, আমি তা কখনও কল্পনাও করিনি। আমি ওসব নিয়ে ভাবিনি। সত্যি বলতে আমি জানি না আমি কী বলব, আমার কী বলা উচিত।
বিদায় বেলায় কী বলা যায়, সেটা নিয়ে গত কয়েক দিনে আমি অনেক চিন্তা-ভাবনা করেছি। কিন্তু সত্যি বলতে আমার মাথায় কিছুই আসেনি, আমি এসব ভাবতেই পারিনি। এতো বছর, আমার পুরো ক্যারিয়ার এখানে পার করার পর এটা আমার জন্য সত্যিই খুব কঠিন। আমি এটার জন্য প্রস্তুত নই।
আমি এই ক্লাবকে ভালোবাসি। দেড় বছর মাঠে কোনো দর্শকদের না দেখেই এভাবে বিদায় নেওয়াটাও খুব কঠিন। বিদায় বেলায় কথা বলার জন্য আমাকে যদি কল্পনা করতেই হতো, আমি ন্যু ক্যাম্পের গ্যালারি ভর্তি মানুষ কল্পনা করতাম, ভালোভাবে বিদায় বলতাম।
আমি থাকতে চেয়েছিলাম। থাকার জন্য যা যা করা দরকার, সম্ভাব্য সবকিছুই আমি করেছি। কিন্তু লা লিগার নিয়মের কারণে থাকা সম্ভব হয়নি। সত্যিকার অর্থে বার্সেলোনার সঙ্গে কোনো সমস্যা ছিল না। ক্লাবের চুক্তির প্রতিটা বিষয় আমি মেনে নিয়েছিলাম। সব কিছু মিলিয়ে আমাদের একটা চুক্তি তৈরি করা হয়, আমি বার্সায় থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। কিন্তু লা লিগার নিয়মের কারণে এটা সম্ভব হয়নি। এটা মেনে নিতেই হবে এবং সামনে পা বাড়াতে হবে।