জিদানকে ‘অসম্মান’ করায় ফরাসি ফুটবল প্রেসিডেন্টকে এমবাপ্পের পাল্টা জবাব
ফুটবল ইতিহাসে জিনেদিন জিদান নিঃসন্দেহে এক কিংবদন্তির নাম। ফ্রান্সের সাবেক এ মিডফিল্ডারের প্রতি বরাবরই নিজের শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কথা প্রকাশ করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তাই এবার জিদানকে 'অসম্মানিত' হতে দেখে নিজ দেশের ফুটবল সংস্থার কর্তাকে পাল্টা জবাব দিতে ভয় পাননি পিএসজি তারকা। খবর দ্য মিররের।
ঘটনার শুরু হয় কাতার বিশ্বকাপ শেষে। পুরো আসরজুড়ে দলগতভাবে দারুণ খেললেও ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যায় ফ্রান্সের। এরপরই আলোচনা শুরু হয় ফ্রান্সের বর্তমান কোচ দিদিয়ের দেশমের ভবিষ্যত নিয়ে। গুঞ্জন ছিল যে, এক দশক ধরে দায়িত্বে থাকা দেশমের পরিবর্তে ফ্রান্স দলের দায়িত্বে আসতে পারেন জিদান। আবার জিদান নিজেও জাতীয় দলের কোচ হওয়ার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
তবে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট নোয়েল লে গ্রেত অবশ্য অনেকটা কড়া ভাষায়ই ফ্রান্সের কোচ হিসেবে জিদানের নিয়োগের গুঞ্জনের জবাব দিয়েছিলেন। ফ্রান্স ফুটবল কর্তা বলেন, "কোচ হিসেবে জিদানের নাম সবসময় আলোচনার মধ্যে ছিল। কারণ তার অনুসারীরা দেশমের অব্যহতির অপেক্ষা করছিল। কিন্তু কেউ কি আসলেই দেশমকে সমালোচনা করতে পারবেন? কেউ পারবেন না! কারণ দেশমকে নিয়ে বড় কোনো সমস্যাই নেই।"
বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর ব্রাজিলের সম্ভাব্য কোচের তালিকায়ও জিদানের নাম রয়েছে বলে শোনা গিয়েছিল। গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাইলেও অনেকটা বাঁকা উত্তর দেন নোয়েল। ফ্রান্স ফুটবল কর্তা বলেন, "এ বিষয়ে আমি ভাবছি না। জিদান যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে পারেন। সেটা যেকোনো ক্লাব কিংবা জাতীয় দল হতে পারে। তাকে নিয়ে আমরা চিন্তিত নই।"
নিজ দেশের কিংবদন্তি ফুটবলারকে নিয়ে নোয়েলের এমন মন্তব্য ভালোভাবে নেননি ফরাসি তারকা ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পে। ২৪ বছর বয়সী এ স্ট্রাইকার টুইটারে পরোক্ষভাবে এর জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, "জিদান মানেই ফ্রান্স। তার মতো কিংবদন্তিকে এভাবে অসম্মানিত করা মোটেও কাম্য নয়।" যদিও কোথাও ফরাসি ফুটবল প্রেসিডেন্টের নাম নেননি পিএসজি স্ট্রাইকার।
এদিকে জিদান ইস্যুতে গণমাধ্যমের ওপর নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফ্রান্স ফুটবল কর্তা। নোয়েল বলেন, "আমার সঙ্গে জিদানের পরিচয় নেই। তাছাড়া আমরা দেশমকে ছাঁটাই করার কথা কখনো চিন্তাই করিনি। কিছু সাংবাদিকদের নিজেদের পরিবর্তন করা জরুরী। কারণ তারা জানেনই না যে তাদের কী নিয়ে লেখা উচিত। তারা ইতিবাচক বিষয়ের থেকে বরং নেতিবাচক বিষয় নিয়েই বেশি বলাবলি করেন।"
২০১২ সাল থেকেই ফ্রান্সের কোচ হিসেবে আছেন দিদিয়ের দেশম। দেশমের অধীনে ২০১৮ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্স। এছাড়াও ঘরের মাঠে ২০১৬ ইউরো ফাইনাল এবং ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলেছেন লে ব্লুদের। সম্প্রতি কাতার বিশ্বকাপের পর দেশমের সঙ্গেই ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে ফরাসি ফুটবল ফেডারেশন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল দলের কোচ হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন জিদান। তাকে পিএসজি-তে কোচ হিসেবে চেয়েছেন এমবাপ্পে; যদিও পিএসজির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব আসেনি জিদানের কাছে। এর আগে জাতীয় দলে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা না থাকলেও রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হয়ে টানা তিনটি চ্যাম্পিয়নস লীগ ট্রফি জয়সহ এ ফুটবল কিংবদন্তির অসাধারণ সব কীর্তি রয়েছে।