সহজ জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর স্বস্তি
সিরিজ হারের যন্ত্রণা তো ছিলোই, পাশাপাশি সঙ্গী হয় হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জও। প্রিয় ফরম্যাটেই দিক হারিয়ে বসা বাংলাদেশ মাঠে নামে চাপের বোঝা মাথায় নিয়ে। যদিও এই ম্যাচে পরীক্ষা দিতে হয়নি ঘরের মাঠের দলটিকে, উল্টো ব্যাটে-বলে বলে শাসন করে আফগানিস্তানকে দুমড়ে-মুচড়েই দিলো বাংলাদেশ। সহজ জয়ে এড়ানো গেলো হোয়াইটওয়াশের অস্বস্তি।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আফগানিস্তানকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে লিটন কুমার দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। এই ম্যাচ হারলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের আনন্দে আছে আফগানরা, এবারই প্রথম বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে তারা।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা আফগানিস্তান পুরো ইনিংসজুড়ে ধুঁকেছে। ম্যাচসেরা শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, সাকিব আল হাসানদের দারুণ বোলিংয়ের বিপক্ষে কেবল আজমতউল্লাহ ওমরজাই লড়াই করতে পেরেছেন। ৪৫.২ ওভারে ১২৬ রানে গুটিয়ে যায় আফগানদের ইনিংস। জবাবে সাকিব ও অধিনায়ক লিটনের ব্যাটে ২৩.৩ ওভারেই ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
ছোট লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমেও শুরুতেই অস্বস্তিতে পড়ে বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারেই ফজল হক ফারুকীর বলে ব্যাট চালিয়ে নিজের স্টাম্প ভাঙেন নাঈম শেখ। প্রথম ম্যাচেও ফারুকীর বলে ইনসাইড এজে আউট হন বাঁহাতি এই ওপেনার। দ্বিতীয় উইকেটে ২৭ রান যোগ করেন লিটন ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
দলীয় ২৮ রানে শান্তও ফারুকীর শিকারে পরিণত হন। আফগান পেসারের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১৫ বলে ১১ রান করেন শান্ত। আফগান বোলারদের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের রান তুলতে সংগ্রাম করতে হলেও সাকিব ছিলেন ব্যতিক্রম। তাকে সবচেয়ে সাবলীল দেখিয়েছে। দ্রুতই উইকেটে মানিয়ে নিয়ে লিটনের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার।
এই জুটিতে ৬১ বলে ৬১ রান পায় বাংলাদেশ। হাফ সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যাওয়া সাকিব দুর্বল শটে আউট হয়ে ফেরেন। মোহাম্মদ নবীর বলে ক্যাচ তুলে ফেরার আগে ৩৯ বলে ৫টি চারে ৩৯ রান করেন তিনি। এরপর তাওহদি হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে জয় তুলে নেওয়ার কাজটি সারেন লিটন। উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান ৬১ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন, এটা তার দশম হাফ সেঞ্চুরি। ১৮ বলে হার না মানা ১৯ রান করেন হৃদয়। আফগানদের ফারুকী ২টি ও নবী একটি উইকেট নেন।
এর আগে দাপুটে শুরুর পর শরিফুল যেভাবে বল হাতে শাসন করছিলেন, মনে হচ্ছিল ১০০ পেরোনোর আগেই অলআউট হয়ে যাবে আফগানিস্তান। তাসকিন, সাকিব, তাইজুলরাও চেপে ধরেন আফগানদের। মহাবিপাকে পড়ে আফগানিস্তান, তবুও তাদেরকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়নি আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের কল্যাণে।
ভাঙনের সুর কানে না তুলে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ডানহাতি এই অলরাউন্ডার হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েও অপরাজিত থাকেন। আফগানিস্তানের মাত্র চারজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করেন। ৭১ বলে একটি চার ও ৩টি ছক্কায় ইনিংস সেরা ৫৬ রান করেন ওমরজাই। অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি ২২, নাজিবুল্লাহ জাদরান ১০ ও স্পিনার মুজিব-উর-রহমান ১১ রান করেন।
৯ ওভারে ২১ রান খরচায় ৪টি উইকেট নেন শরিফুল, ওয়ানডেতে এটাই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। তাসকিন ও তাইজুল ২টি করে উইকেট পান। সাকিব ও মিরাজ নেন একটি করে উইকেট। ১০ ওভারে মাত্র ১৩ রান খরচা করেন সাকিব। শরিফুল তার ১০ ওভারের কোটা পূরণ করতে পারলে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেটের দেখা পেয়েও যেতে পারতেন। কিন্তু চোট নিয়ে মাঠ ছাড়ায় তা হয়নি।