কঠিন লড়াইয়ের পর হার মানলেন ভারতের প্রজ্ঞানন্দ, দাবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেন
শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞতার কাছেই হার মানলেন ভারতের তারকা দাবাড়ু রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ। শেষ লড়াইয়ে ম্যাগনাস কার্লসেনের কাছে হার মানলেন তিনি।
অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলেন কার্লসেনই। হার মানল তারুণ্য। তবে দাবা বিশ্বকাপের ফাইনালে রানার্সআপ হলেও, বিশ্বের এক নম্বর কার্লসেনের সঙ্গে জোর টক্কর দিয়ে সবার মন জয় করে নিলেন ১৮ বছরের প্রজ্ঞা।
মঙ্গল ও বুধবার প্রথম দুটি ক্লাসিক্যাল রাউন্ড ড্র হওয়ায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। বৃহস্পতিবার সেই লড়াইয়ে আর শেষ রক্ষা হলো না, পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নের কাছে হার মানলেন ১৮ বছরের প্রজ্ঞানন্দ।
ফাইনালের প্রথম টাইব্রেক জেতেন ম্যাগনাস কার্লসেন। ৪৭ চালের লড়াইয়ের পর দুরন্ত চালে শেষ করেন কার্লসেন। সেই সঙ্গে প্রথম টাইব্রেকে জিতে ১-০-তে লিড নেন নরওয়ের কিংবদন্তি। দ্বিতীয় টাইব্রেক তাই প্রজ্ঞার কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ডু অর ডাই পরিস্থিতিতে স্নায়ুর চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন ছিল। তবে সেই জায়গাতেই পিছিয়ে পড়ে ১৮ বছরের উঠতি তারকা। দ্বিতীয় টাইব্রেকে ড্র করে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো প্রজ্ঞানন্দকে। ফের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলেন নরওয়ের কার্লসেন।
টাইব্রেকারে প্রথম র্যাপিড রাউন্ডে শুরু থেকেই রক্ষণাত্মক মানসিকতা নিয়ে খেলতে শুরু করেছিলেন প্রজ্ঞা, কার্লসেন দুই তারকাই। রীতিমতো স্নায়ুর যুদ্ধ চলছিল। এদিকে ঘড়ির কাঁটাও নিজের গতিতে এগোচ্ছিল। মাঝে একটি চাল দিতে গিয়ে সাড়ে ৬ মিনিট সময় নিয়ে নেন প্রজ্ঞানন্দ। সেখানে কিছুটা পিছিয়ে পড়েন তিনি।
প্রজ্ঞার সময় কমতে থাকায় খেলায় ভুল করতে শুরু করেন তিনি। এতে তার রাজা অরক্ষিত হয়ে যায়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজিমাত করেন কার্লসেন। কারণ একটা পরিস্থিতিতে প্রজ্ঞার সময় ১০ সেকেন্ডের নিচে নেমে গিয়েছিল। সেখান থেকে হার মানা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না ১৮ বছরের তারকার।
র্যাপিডের দ্বিতীয় রাউন্ডে আবার সাদা ঘুঁটি নিয়ে খেলতে শুরু করেন কার্লসেন। একেই অভিজ্ঞ তিনি, তার ওপর উল্টোদিকে একেবারেই তরুণ প্রজ্ঞা। প্রথম টাইব্রেকে হেরে কিছুটা চাপেও পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। ফলে সবদিক থেকেই র্যাপিডের দ্বিতীয় রাউন্ডে এগিয়ে থেকে শুরুটা করেছিলেন কার্লসেন।
প্রজ্ঞা যে চাপে পড়ে গিয়েছিল, সেটা তার খেলা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। প্রতিটি চাল দিতে তিনি যেমন সময় নিচ্ছিলেন, তেমনই ভুলও করে বসছিলেন। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে ২২ চালের পরে ড্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন দুই প্রতিযোগী। খেলা জিতে যান কার্লসেন।