দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুঁড়িয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস
বিশ্ব ক্রিকেটে আফগানিস্তান এখন 'জায়ান্ট কিলার'। বড় বড় দলগুলোর বিপক্ষে জয় তুলে নেওয়া নিয়মে পরিণত করেছে তারা। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে হারানোসহ প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে খেলে তারা। এবার ৫০ ওভারের ম্যাচেও চমক দেখালো আফগানরা। ম্যাচসেরা ফজল হক ফারুকী, আল্লাহ ঘাজানফানদের দুর্বার বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়েছে আফগানিস্তান।
বুধবার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে আফগানরা। ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এটাই আফগানিস্তানের প্রথম জয়, আগের দুই সাক্ষাতেই হেরেছিল তারা। ১৪৪ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান। এই ফরম্যাটে বল হাতে রেখে জেতার দিক থেকে এটা তাদের পঞ্চম সর্বোচ্চ জয়।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা পুরো ইনিংসজুড়ে ধুঁকেছে। ফারুকী, ঘাজানফার, রশিদ খানদের দারুণ বোলিংয়ের সামনে উইয়ান মুল্ডার ছাড়া কেউ-ই লড়তে পারেননি, হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। এর বাইরে কেবল তিনজন দুই অঙ্কের রান করেন, কিন্তু কেউ-ই ২০ রান ছাড়াতে পারেননি। ৩৩.৩ ওভারে ১০৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় প্রোটিয়ারা। যা ওয়ানডেতে তাদের সপ্তম সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ।
অল্প রান তাড়ায় শুরুতে ভুগতে হয় আফগানিস্তানকে। স্কোরকার্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই রহমানউল্লাহ গুরবাজকে হারায় তারা। ৩৮ রানের মধ্যে যায় আরও ২ উইকেট। ৫০ পেরিয়ে আরও একটি উইকেট পড়লেও অবশ্য বাকি পথে আর সমস্যা হয়নি দলটির। আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও গুলবাদিন নাঈব মিলে দলের জয় নিশ্চিত করেন। ২৬ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় আফগানরা।
লক্ষ্য তাড়ায় আফগানিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন গুলবাদিন, ডানহাতি এই অলরাউন্ডার ২৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন। ৩৬ বলে ২টি চারে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন ওমরজাই। এ ছাড়া অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি ও রিয়াজ হাসান ১৬ রান করে করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিয়র্ন ফরটইন ২টি এবং লুঙ্গি এনগিডি ও এইডেন মার্করাম একটি করে উইকেট পান।
এর আগে ব্যাটিং করা দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে কেবল মুল্ডারই লড়তে পেরেছেন। চরম বিপর্যয়ের মাঝে দাঁড়িয়েও ডানহাতি এই অলরাউন্ডার ৮৪ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৫২ রান করেন। যেকোনো ফরম্যাটে এটাই তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। এ ছাড়া তিন অঙ্ক ছোঁয়া বিয়র্ন ১৬, কাইল ভারেইন ১০ ও টনি ডি জর্জি ১১ রান করেন। বাকিদের কেউ ৯ রানের বেশি করতে পারেননি। আফগান বাঁহাতি পেসার ফারুকী ৭ ওভারে ৩৫ রানে ৪টি উইকেট নেন। ১০ ওভারে ২০ রানে ঘাজানফারের শিকার ৩ উইকেট। ৮.৩ ওভারে ৩০ রানে ২ উইকেট নেন দলটির তারকা লেগ স্পিনার রশিদ।