কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুই সাংবাদিক গ্রেপ্তার
সাম্প্রদায়িক উস্কানির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলায় কুমিল্লায় দুই সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, অনলাইন পোর্টাল কুমিল্লা টাইমসের সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেইন শিমুল এবং নির্বাহী সম্পাদক ফয়সাল মবিন পলাশ।
কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, "অনলাইন মিডিয়া কুমিল্লা টাইমস নানুয়ার দীঘির পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন শরীফ উদ্ধারের ভিডিও প্রকাশ করায় দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।"
এদিকে, কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘির পাড়ে অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অন্যান্য হামলা ও ভাঙচুরের দুই মামলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার (১ নভেম্বর) বিকেলে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা ও সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশ অনুষ্ঠানিকভাবে মামলার নথিপত্র সিআইডির কাছে হস্তান্তর করেন। এর আগে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনের মামলা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলা সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে সিআইডি, কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার জানান, নানুয়ার দিঘির পাড়ে অস্থায়ী পূজামণ্ডপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলায় প্রতিমা ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস হোসেন গত ১৪ অক্টোবর ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৮০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত ছয়জন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই দিনে কুমিল্লা নগরীতে মন্দির ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আলিম ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ৩০ অক্টোবর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে এ মামলা দু'টি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই আলোকে সোমবার মামলার সব ডকুমেন্ট অনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, নানুয়ার দিঘির পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন বিভিন্ন থানায় এখন পর্যন্ত ১১ মামলা হয়েছে। এরমধ্যে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় সাতটি, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় দুটি, দাউদকান্দি ও দেবিদ্বার থানায় একটি করে মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এ পর্যন্ত ৯১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দুর্গাপূজা চলাকালে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘির পাড়ের ওই পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।