১৩০ টাকা বেতনের নুরুল এখন ৪৬০ কোটি টাকার মালিক
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে টেকনাফ বন্দরের সাবেক চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটর নুরুল ইসলামকে জাল টাকা ও মাদকসহ আটক করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তার নুরুল বন্দরের এই চাকরিকে কাজে লাগিয়ে দালালীর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ৪৬০ কোটি টাকা। বন্দরের এই চাকরিতে ২০০১ সালে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক ১৩০ টাকা হারে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, বন্দরে কর্মরত থাকাকালীন তার অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে চোরাকারবার, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস ও দালালির কৌশল রপ্ত করে নুরুল ইসলাম। প্রায় ৮ বছর পর চাকরি ছেড়ে নিজেই দালালির সিন্ডিকেট তৈরি করেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, "গ্রেপ্তারকৃত নুরুল টেকনাফ বন্দরকেন্দ্রিক দালালী সিন্ডিকেটের অন্যতম মূলহোতা। তার সিন্ডিকেটের ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছে। যারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে দালালী কার্যক্রমগুলো করে থাকে। এই সিন্ডিকেটটি পণ্য খালাস, পরিবহন সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পথিমধ্যে অবৈধ মালামাল খালাসে সক্রিয় ছিল। সিন্ডিকেটের সহায়তায় পার্শ্ববর্তী দেশ হতে কাঠ, শুটকী মাছ, বরই আচার, মাছ ইত্যাদির আড়ালে অবৈধ পণ্য নিয়ে আসা হত। চক্রটির সদস্যরা টেকনাফ বন্দর, ট্রাক স্ট্যান্ড, বন্দর লেবার ও জাহাজের আগমন-বর্হিগমন নিয়ন্ত্রণ করত। গ্রেফতারকৃতের সাথে চিহ্নিত মাদক কারবারীদের যোগসাজশ ছিল বলে সে জানায়। এছাড়া সে অন্যান্য অবৈধ পণ্যের কারবারের জন্য হুন্ডি সিন্ডিকেটের সাথে সমন্বয় এবং চতুরতার সাথে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েজ কারসাজী করত।"
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "অবৈধ আয়ের উৎসকে ধামাচাপা দিতে সে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে; এরমধ্যে এমএস আল নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এমএস মিফতাউল এন্টারপ্রাইজ, এমএস আলকা এন্টারপ্রাইজ, আলকা রিয়েল স্টেট লিমিটেড এবং এমএস কানিজ এন্টারপ্রাইজ অন্যতম।"
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকা শহরে ৬ টি বাড়ি ও ১৩ টি প্লট ক্রয় করেছে নুরুল ইসলাম। এছাড়াও সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে বেনামে ৩৭ টি জায়গা/প্লট/বাগানবাড়ি/বাড়ি রয়েছে। তার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের আনুমানিক মূল্য ৪৬০ কোটি টাকা। তার নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ১৯ টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। বর্তমানে সে জাহাজ শিল্প ও ঢাকার সন্নিকটে বিনোদন পার্কে বিনিয়োগ করছে বলে জানা যায়।
নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা।