হালকা যানবাহনের চালকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার করার দাবি
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় ন্যূনতম মাসিক বেতন ২৫ হাজার টাকা করার পাশাপাশি একটি মজুরি বোর্ড গঠনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসসহ হালকা যানবাহনের চালকরা।
ঢাকার ট্যাক্সি, অটো-টেম্পো, অটোরিকশা চালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানায়।
চালকরা আরো দাবি করেন- নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্রসহ শ্রম আইন স্বীকৃত অধিকারগুলো প্রাইভেটকার চালকদের জন্য নিশ্চিত করা, ড্রাইভিং লাইসেন্সের ভিত্তিতে হালকা যানবাহন চালকদের রেশনসহ কল্যাণ সুবিধা নিশ্চিত করা এবং প্রাইভেটকার-হালকা যানবাহন চালকদের আইনানুগ পাওনা আদায়সহ পরিবহন শ্রমিকদের জন্য শ্রম আইন বাস্তবায়নে শ্রম দপ্তরের কার্যকর ভূমিকা পালন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল বলেন, "ঢাকা শহরে পাঁচ লক্ষাধিক হালকা যানবাহন চালক তাদের রক্ত পানি করে, ঘাম ঝরিয়ে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।"
"রাজধানীতে অবস্থান করেও এই শ্রমজীবী মানুষরা দৈনিক নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, সাপ্তাহিক-বাৎসরিক-অর্জিত ছুটি, চাকরির নিরাপত্তা কিংবা ক্ষতিপূরণসহ শ্রম আইন স্বীকৃত সব শ্রম অধিকার থেকে বঞ্চিত। ধনাঢ্য মালিকের অন্যায় থেকে দরিদ্র প্রাইভেটকার চালককে রক্ষার জন্য রাষ্ট্র দায়িত্ব নেয় না," যোগ করেন তিনি।
আহসান হাবিব আরো বলেন, "অভাবের সুযোগ নিয়ে একজন প্রাইভেটকার চালককে নামমাত্র বেতনের বিনিময়ে কোনো রকম ছুটি ছাড়া দৈনিক ১৪/১৬ ঘণ্টা কাজ করার অমানবিক শর্তে চাকরিতে নেয় মালিকরা। আর দিনের কাজ শেষে পরের দিন কাজে যোগ দেওয়ার নিশ্চয়তা থাকে না, কৃতকাজের মজুরি পাবে কি না তার নিশ্চয়তা থাকে না।"
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রতারক মালিকরা শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে, পুলিশের তত্বাবধানে সালিশের সিদ্ধান্তও অমান্য করে এবং তারপরও শাস্তি পায় না। চালকের পাওনা আদায় করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের কোনো সংস্থা দায়িত্ব নেয় না তখন গাড়িচালকরা রাষ্ট্রের আইন মানবে কেন?
অবিলম্বে প্রাইভেটকার চালকসহ যেসব শ্রমজীবীকে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয় না- তাদের আইনানুগ পাওনা আদায়সহ শ্রম অধিকার বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা নির্দিষ্ট করার দাবি জানান তারা।
তারা বলেন, বাবার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় এবং প্রশাসনিক ক্ষমতাবান আত্মীয়দের নাম ব্যবহার করে পাইওনিয়ার ডেনিমের উপ মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেনের মতো যারা শ্রমিকের মজুরি আত্মসাতের প্রচেষ্টা করছে, আইন অমান্য করছে, প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে সেই মালিকরূপী প্রতারকদের গ্রেপ্তার করে শ্রমিকের পাওনা আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়াও ইউনিয়নের সহ সভাপতি বিরেশ চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সহ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, দপ্তর সম্পাদক রুবেল মিয়া, অর্থ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবলু, আজিজুর রহমান প্রমুখ।