রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আপত্তি নেই: তৌফিক-ই-ইলাহী
বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করলে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আপত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
বুধবার (৩১ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, "মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি জানতে চেয়েছিলাম রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কি না। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের তেল, সার ও খাদ্যের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। তাই আমরা ধরে নিতে পারি যে রাশিয়া বা অন্যান্য দেশ থেকে তেল আমদানিতে কোনো সমস্যা নেই।"
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ফর ইকোনমিক গ্রোথ, এনার্জি এবং এনভায়রনমেন্ট হোসে ডব্লিউ ফার্নান্দেজের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
"আমরা মনে করি জ্বালানি তেল আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সহায়তা করবে," বলেন তিনি।
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ৫ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম ৪২-৫১% বাড়ানো একটি ভালো সিদ্ধান্ত ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
"জ্বালানির দাম নিয়ে কী হবে তা আমরা এখনই বলতে পারছি না; তা শুধু আল্লাহই জানেন" যোগ করেন তিনি।
"আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় জনগণের জন্য উদ্বিগ্ন, সে কারণেই জ্বালানি তেলের দাম ৫ টাকা কমানো হয়েছে।"
৫ আগস্ট জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫ শতাংশ এবং পেট্রোল ও অকটেনের দাম ৫১ শতাংশ বৃদ্ধি করে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ এবং ডিজেলের উপর সমস্ত অগ্রিম কর প্রত্যাহারের পর সোমবার (২৯ আগস্ট) গ্রাহক পর্যায়ে আবারো তেলের দাম সামঞ্জস্য করা হয়।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি দেশের অন্যতম আলোচিত বিষয়। এ মূল্যবৃদ্ধির ফলে ইতোমধ্যে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে চলেছে। এতে ফলে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপরই জ্বালানী তেল এবং গ্যাসের বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন ব্যাহত হয়ে এসব পণ্যের দাম হয়ে যায় আকাশচুম্বী।
নিষেধাজ্ঞার ফলে ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে পশ্চিমা বিশ্বে বাণিজ্যের পরিমাণ কমে আসায় রাশিয়া তাদের জ্বালানীর দামে ছাড় দিচ্ছে। চীন, ভারত, এমনকি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী সৌদি আরবও এই সুযোগের সর্বোত্তম ব্যবহার করছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে দেশগুলো সস্তায় রাশিয়ান তেল কিনছে। পরিশোধনের পর সেই তেল তারা ইউরোপে বেশি দামে বিক্রি করছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মস্কোর অপরিশোধিত তেল পরিশোধনের সক্ষমতা না থাকায় রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি রোসনেফ্ট অয়েল কোম্পানি বাংলাদেশের কাছে পরিশোধিত তেল বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে।