বিজেপি এ অঞ্চলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী: নাড্ডা
ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-এর সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেছেন, তার দল এ অঞ্চলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সন্ত্রাস দমনের স্বার্থে অতীতের মতো আগামীতেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
সফররত আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সোমবার (৭ আগস্ট) তার বাসভবনে বৈঠককালে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিজেপির দীর্ঘদিনের উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে আমরা দলীয় পর্যায়ে যোগাযোগ জোরদার করে আমাদের এ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।'
এ সময় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। প্রতিনিধি দলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আরমা দত্ত, ও অধ্যাপক মেরিনা জাহান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জঙ্গিবাদ দমন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এবং রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে নাড্ডা বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সময় থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তৎকালীন তরুণ সংসদ সদস্য ও পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ১৯৭১ সালে ভারতের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের পক্ষে প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে দুই দেশের সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
বিজেপি সভাপতি শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ এখন সব উন্নয়ন সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় দৃষ্টান্ত, যা দেখে আমরাও খুশি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বাংলাদেশেই নয়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বর্তমান সরকারের আমলে দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর সমাধান হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় শান্তি বিরাজ করছে, যা দুই দেশের বন্ধুত্বের মাত্রাকে আরও শক্তিশালী করেছে। আমরা এ সম্পর্ক ধরে রাখতে দুই দেশের মধ্যকার সরকারের চলমান সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাই।
বৈঠক শেষে প্রতিনিধি দলের সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচার ড. মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বাসসকে বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে এ বৈঠক চলে। প্রায় দেড়ঘণ্টা ধরে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা বিজেপি সভাপতির সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিজেপির মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। অতীতে দেশ দু'টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা দলীয় পর্যায়ে বা সরকারি পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছে।
তথ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও এগিয়ে যাবে।
বিজেপির সভাপতির সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকের আগে বিজেপির দিল্লীস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলাদা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও অত্যন্ত খোলামেলা আলোচনায় দুই দেশ ও দুই রাজনৈতিক দলের বন্ধুত্বের বিষয়টি গুরুত্ব পায়।
বৈঠকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তড়ে বলেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের দুই বন্ধুপ্রতীম দল সবসময় এ সম্পর্ক অটুট রাখতে কাজ করে যাবে।
পরে সেদেশের জাতীয় সংসদ ভবনে ভারত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শঙ্করের সঙ্গেও সফররত আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের সরকার প্রধান শেখ হাসিনার সরকারের আমলে দুই দেশের মধুর সম্পর্ক অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আলাদা।