‘তওবা-আস্তাগফিরুল্লাহ’- বিএনপিতে ফেরার প্রশ্নে শাহজাহান ওমর, ডিবিপ্রধানের সঙ্গে ভোজের ভিডিও ভাইরাল
কিছুদিন আগেই বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম। ঝালকাঠি-১ আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। তবে ভবিষ্যতে আবারও বিএনপিতে ফেরার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, 'তওবা-আস্তাগফিরুল্লাহ'। হঠাৎ এ দল বদলকে 'ডিগবাজি' বলতেও নারাজ তিনি। দল পাল্টানো তাঁর সাংবিধানিক অধিকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যালয় থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় নির্বাচনের আগ মুহূর্তে দল পরিবর্তন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, এটিকে ডিগবাজি বলে নাকি? এটি সাংবিধানিক অধিকার, আদর্শগত ব্যাপার। সবসময় সবখানে এডজাস্টমেন্ট করা সম্ভব নাও হতে পারে। আমি এই বৃদ্ধ বয়সে এসে মনে হলো জনগণের জন্য কাজ করি। কারণ, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহজাহান ওমর এদিন সকালে প্রধান বিচারপতির সাথে দেখা করতে আদালতে যান, এসময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের প্রবল বিরোধীতার মুখে আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে থেকে চলে যান তিনি। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা তাঁকে কটুক্তি করে স্লোগানও দেন। এসময় তাঁকে 'বেঈমান'ও বলেন অনেকে।
তবে প্রধান বিচারপতির সাথে দেখা করতে চাওয়ার দাবি অস্বীকার করেছেন শাহজাহান ওমর।
এ ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "ঈমান তো একমাত্র আল্লাহ'র কাছে। এ ছাড়া তো ঈমান হয় না। আপনার সাথে আজকে আমার ভালো সম্পর্ক, কাল সেটা নাও থাকতে পারে। এতে কি আপনার সাথে বেঈমানি করলাম? বেঈমানি তো ধর্মের বিষয়। রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে আমি অন্য দলে যাওয়ায় বেঈমানি হয়নি।"
তিনি বলেন, একটা দল করা আমার সাংবিধানিক অধিকার। দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে বড় বড় রাজনীতিবিদরাও দল পরিবর্তন করেন। আমি পাকিস্তান আর্মিতে ছিলাম, শপথ পাঠ করেই অফিসার হয়েছি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় আগস্ট মাস থেকে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি।
ডিবি কার্যালয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে শাহজাহান ওমর বলেন, একটা ব্যক্তিগত কারণে কোর্ট থেকে এখানে এসেছি। আমি আগে বিএনপি করতাম, এখন আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর থেকে আমি সাইবার বুলিংয়ের স্বীকার হচ্ছি। আমার ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী এমনকি আমার জুনিয়র আইনজীবীকে ফোন করে নানান কথা বলা হচ্ছে। সে বিষয়টিই হারুন সাহেবকে (ডিবিপ্রধান) জানিয়েছি।
ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশীদের সঙ্গে দুপুরের খাবারও খান শাহজাহান ওমর। মধ্যাহ্নভোজের এই ভিডিও বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর ফেসবুক পেইজে শেয়ারও করেছেন হারুন, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিও'র ক্যাপশনে হারুন লিখেছেন, 'বরেন্য রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর আজ ডিবি কার্যালয়ে আমার কাছে সাইবার বুলিং সংক্রান্তে অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। তার অভিযোগটি আন্তরিকতার সাথে শুনি এবং সময়টি দুপুরের লাঞ্চ টাইম হওয়ায় আমরা সবাই একসাথে দুপুরের খাবার গ্রহণ করি।'