ঈদের টানা ছুটিতেও চালু থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমসের কার্যক্রম
ঈদুল ফিতরের ছুটিতেও চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম চালু থাকবে। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমসহ সাপ্লাই চেইন চালু রাখতে বেসরকারি ডিপোসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার প্রতিষ্ঠানগুলো এ সময়ে খোলা রাখা হবে।
আগামী ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন ঈদুল ফিতরের ছুটি। এ সময়ে বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম চালু রাখতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দেশনা জারি করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন বিভাগে নিয়োজিত করা হয়েছে জনবল।
চট্টগ্রাম বন্দরের এক নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, ছুটির সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর, পানগাঁও আইসিটি (ইনল্যান্ড কন্টেইনার টার্মিনাল) ও ঢাকা কমলাপুর আইসিডিসহ (ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো) সব ধরনের কাজ চালু থাকবে।
এই লক্ষ্যে বন্দরের অভ্যন্তরে থাকা জনতা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংকসহ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত অন্যান্য ব্যাংকের বুথে জনবল নিয়োজিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা এবং সকল প্রাইভেট ডিপোসমূহকে কার্যক্রম চালু রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
গত ৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, 'এবারের ঈদেও বন্দরের কার্যক্রম চালু রাখতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। সব স্টেকহোল্ডারদের এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'ঈদের দিন ডেলিভারি কার্যক্রম কিছু সময় বন্ধ থাকলেও বিকেল থেকেই পুনরায় চালু হবে। কেউ চাইলে ঈদের দিন বিকেলে পণ্য ডেলিভারি নিতে পারবেন। এছাড়া জাহাজে পণ্য ওঠানো-নামানোও চলবে।'
এদিকে চট্টগ্রাম কাস্টমসও কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়েও নির্দেশনা জারি করেছে। ঈদের ছুটিতে ডেপুটি কমিশনার, রাজস্ব কর্মকর্তা, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, শাখা সহকারীদের কাস্টমসের শুল্কায়ন কার্যক্রম চালু রাখার শিডিউল নির্ধারণ করেছে কাস্টমস।
চট্টগ্রাম ইপিজেডে রপ্তানি কার্যক্রম চালু রাখতেও কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
তবে বন্দর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো চালু থাকলেও যদি আমদানিকারকরা পণ্য ডেলিভারি না নেন, তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখলেও এর সুফল পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, 'বন্দর চালুর সুফল পেতে হলে এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে চালুর রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।'
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোটস অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইসিডিএ) সেক্রেটারি জেনারেল রুহুল আমিন শিকদার বলেন, 'গত এক দশক ধরে ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরের মতো বেসরেকারি কন্টেইনার ডিপোগুলো চালু থাকে। কিন্তু ঈদের আগে এবং ৪-৫ দিন পরে কন্টেইনার ডেলিভারি অনেকটাই কমে যায়। এ কারণে বন্দর এবং ডিপোগুলোতে জট তৈরি হয়। এটি প্রতি বছরের ঘটনা।'
তিনি বলেন, 'ঈদের আগের এবং পরের তিন দিন ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকে। এ কারণে আমদানি পণ্য ডেলিভারি নিতে সমস্যায় পড়েন আমদানিকারকরা। সড়ক পথে হয়রানি, বাড়তি ভাড়াসহ নানা সমস্যার কারণে আমদানিকারকরা ঈদের ছুটিতে পণ্য ডেলিভারি নিতে চান না।