এমপি আনারের দেহাংশ সম্বলিত ট্রলিব্যাগ খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
নিখোঁজ হওয়ার ২২ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর নিহত বাংলাদেশি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের দেহাংশ সম্বলিত ট্রলিব্যাগটি উদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছে পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে এমনটিই বলা হয়েছে।
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "তিনি নিখোঁজ হওয়ার ২২ দিন পার হয়েছে। তাই মনে করা হচ্ছে, ট্রলিব্যাগটি এখন শনাক্ত করা অসম্ভব হয়ে উঠবে। তবুও, আমাদের অফিসাররা তল্লাশি চালিয়ে যাবেন... বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দাদের সাথে কথা বলার পর আমরা শীঘ্রই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।"
গত ১২ মে তারিখে ভারতের কলকাতায় চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। এরপরের দিন ১৩ মে থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরবর্তীতে ১৮ মে তারিখে স্থানীয় পুলিশের কাছে তার নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়।
গোয়েন্দারা কলকাতার নিউ টাউন এলাকায় এবং তার আশেপাশের এলাকায় এমপি আনারের দেহাংশের অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছে। নিউ টাউনের যে ফ্ল্যাটে তাকে হত্যা করা হয়েছিল, সেখান থেকে প্রাপ্ত আঙুলের ছাপও মেলানোর পরিকল্পনা করছে পুলিশ।
এদিকে এমপি আনার হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. সিয়াম হোসেনকে নেপালে গ্রেপ্তারের পর কলকাতার অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হেফাজতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নেপাল পুলিশ তাকে পশ্চিমবঙ্গ অপরাধ তদন্ত বিভাগের হেফাজতে হস্তান্তর করেছে। বাংলাদেশ ও ভারত— উভয় দেশের তদন্ত বিভাগই তাকে খুঁজছিল।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান শুক্রবার (৭ জুন) বলেন, "ভারতের সাথে নেপালের পারস্পারিক আইনি চুক্তি থাকায় নেপালে আটক সিয়াম এখন কলকাতা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে জানতে পেরেছি।"
কলকাতায় এমপি আনার হত্যার পর দেশ ছেড়ে পালায় সিয়াম; এরপর থেকে সে নেপালেই আত্মগোপন করে ছিল।
উদ্ধারকৃত দেহাংশের ডিএনএ মেলানো কঠিন: বিশেষজ্ঞরা
বিশেষজ্ঞদের মতে, কলকাতার সেপ্টিক ট্যাংক থেকে উদ্ধারকৃত মাংসের কোষগুলো যদি পচে না গিয়ে থাকে, তাহলেই কেবল সেখান থেকে ডিএনএ প্রোফাইলিং করা সম্ভব হবে। অন্যথায়, সেপ্টিক ট্যাংক থেকে উদ্ধারকৃত নমুনার মাধ্যমে ফল পাওয়া যাবে না।
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিএনএ পরীক্ষার সময় উদ্ধার করা টুকরো মাংসের কোষগুলো অবশ্যই তাজা হতে হবে।
কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেন সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হওয়া দেহাংশের ফরেনসিক ডিএনএ রিপোর্ট এখনও ঢাকায় এসে পৌঁছায়নি। রিপোর্ট ঢাকায় পৌঁছালে এমপি আনারের মেয়ে ও পরিবারের সদস্যরা ভারতে যাবেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, হত্যার ১৬ দিন পর উদ্ধার করা হলে মাংস পচে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক।
"কোষগুলো পচে গেলে ডিএনএ নমুনা পাওয়া যাবে না। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে, মাংসের একটি কোষও যদি বেঁচে থাকলে, তাহলে সেটি দিয়েই ডিএনএ প্রোফাইল মেলানো সম্ভব হবে।"
তিনি বলেন, কোষের বেঁচে থাকা নির্ভর করছে মাংসের টুকরোগুলোর অবস্থার ওপর।