কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষার্থী-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, টিয়ারশেল নিক্ষেপ; আহত ২০
চলমান কোটাসংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের সাথে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকালে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বলে জানা যায়। এতে পুলিশ, শিক্ষার্থী ও তিন সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
আজ বিকাল সোয়া ৩টায় কুবি শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অভিমুখে রওনা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানে এই সংঘর্ষ ঘটে।
জানা যায়, এসময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে প্রথমে বাক-বিতণ্ডা হয়। এরপর আবাসিক হল ও মেসের প্রায় ৭০০-৮০০ শিক্ষার্থী এসে যুক্ত হয়ে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এরপর শর্টগান দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলির পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। কিছুক্ষণ পর দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেধে যায়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে শিক্ষার্থীদের ইট ও পাথর নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।
পুলিশের আঘাতে 'আমাদের সময়'-এর সংবাদদাতা অনন মজুমদার এবং 'দৈনিক ইত্তেফাক'-এর সংবাদদাতা মানছুর আলম অন্তরসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড পার হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোটবাড়ি বিশ্বরোড অভিমুখে মিছিল নিয়ে যাচ্ছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আজ বিকালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার কোটবাড়ির দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। বিকাল সোয়া ৩টা থেকে সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত প্রথমবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর বিকাল সাড়ে ৩টায় আনসার ক্যাম্পের সামনে ফের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলাম। এসময় পুলিশের হামলায় সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, 'পুলিশের অবস্থানের খবর আমরা জেনেছি। কেন্দ্রে থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। কেন্দ্র যা সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তাই মানবো।'
এদিকে মহাসড়কের কুমিল্লার কোটবাড়ি অংশের চারদিকেই অবস্থান নিয়েছেন কুবিসহ জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তবে কাউকেই সড়কে দেখা যায়নি। যারাই সড়কে উঠতে চাচ্ছেন, তাদেরই আটকে দিচ্ছে পুলিশ।
অন্যদিকে, আনসার ক্যাম্প এলাকায় এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশফাকুজ্জামান বলেন, 'আজ ছাত্রদের রাস্তায় উঠতে দেওয়া হবে না। সড়ক ক্লিয়ার রাখার নির্দেশনা আছে।'