বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক, পেট্রাপোলে হাজারো ট্রাকের সারি
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আজ বুধবার প্রায় ৩০০ ট্রাক পণ্য আমদানি ও ৫০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এদিন অটোমেশনে শুল্কায়ন করা হয়।
কারফিউ ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকায় যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। এতে ভারতের পেট্রাপোলে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। অন্যদিকে বেনাপোলেও তৈরি হয় ট্রাকজট।
ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় এ কয়েকদিন অটোমেশনে শুল্কায়ন করা না গেলেও গত তিনদিন বোনপোলে ম্যানুয়ালি পচনশীল দ্রব্য, খাদ্যপণ্য ও কলকারখানার কাঁচামাল আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালানো হয়েছে। আজ থেকে বন্দর ও কাস্টমসের সার্ভার সিস্টেম স্বাভাবিক হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুলাই থেকে প্রতিদিন দুপুর ১২ টা থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। পচনশীল পণ্য খালাসে রাত ১২টা পর্যন্তও কার্যক্রম চলমান থাকছে। গতকাল মঙ্গলবার ১২৮ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি ও ১১৬ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আমদানি পণ্যের মধ্যে টমেটো, কাঁচামরিচ, মাছ ও খেজুর রয়েছে। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে, তৈরি পোশাক ও পাটজাত পণ্য।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. আব্দুল হাকিম বলেন, 'কারফিউয়ের মধ্যে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় তিনদিন ম্যানুয়ালি পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে সার্ভার সিস্টেম ঠিক হয়েছে। বুধবার থেকে সব কার্যক্রম স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলেছে।'
এর আগে কারফিউ ও ইন্টারনেটে সমস্যার কারণে বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। প্রতিদিন যেখানে সাড়ে ৩০০ ট্রাক পণ্য আমদানি ও ১২০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হতো, সেখানে গত তিনদিনে মাত্র ৫৫ ট্রাক পণ্য খালাস করা হয়েছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ইন্টারনেট সার্ভার চালু না থাকায় বন্দরের অভ্যন্তরে কমপক্ষে ৫ হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে অপেক্ষা করছে। আজ গাড়ি চলাচল শুরু হলে ট্রাকগুলো বন্দর ছেড়ে যেতে শুরু করে।
পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্ত্তী বলেন, 'বাংলাদেশের পণ্য নিয়ে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা ট্রাকের সারি কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ হয়েছে। যা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে, পণ্য জট সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।'
বেনাপোল কাস্টম হাউসের কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, গত তিনদিনে ভারত থেকে আসা পচনশীল নিত্যপণ্যের ৫৫টি চালান ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ছাড় করা হয়। একইসাথে কয়েকটি রপ্তানি চালানও পাঠানো হয় ভারতে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আবদুল রশিদ জানান, বুধবার থেকে কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ অটোমেশন পদ্ধতিতে পণ্য খালাস শুরু করেছে। তবে পেট্রাপোলে ও বেনাপোল বন্দরে ট্রাকজট রয়েছে অনেক।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক রেজাউল ইসলাম জানান, গতকাল অটোমেশনে শুল্কায়ন করা হয়েছে। প্রায় ৩শ ট্রাক পণ্য আমদানি ও ৫০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে।