সাবেক আইজিপিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আবু সাঈদের পরিবারের মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আজ রোববার (১৮ আগস্ট) নিহত আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাজহাট মেট্রোপলিটন আমলি আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক রাজু আহমেদ তাজহাট থানাকে মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী রায়হানুজ্জামান।
মামলার আসামির তালিকায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানসহ ১৭ জনের নাম রয়েছে।
মামলার অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন রংপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আল মারুফ হোসেন, সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান ও আল ইমরান হোসেন, তাজহাট থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম, পুলিশের এএসআই সৈয়দ আমীর আলী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়।
এছাড়া আসামি করা হয়েছে— বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক শামিম মাহফুজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদ মণ্ডল, গণিত বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা রাফিউল হাসান রাসেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতিভূষণ, বেরোবি ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেনকে। এছাড়া আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী নিহতের ভাই রমজান আলী সাংবাদিকদের বলেন, নানা কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আবু সাঈদ। গত ১৬ জুলাই, পুলিশ আবু সাঈদকে নিরস্ত্র অবস্থায় গুলি করে হত্যা করে, যদিও তিনি পুলিশের জন্য কোনো হুমকি ছিলেন না।
ঘটনার সময়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে নির্দেশ দেন এবং প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা রাফিউল হাসান পুলিশকে গুলি করতে প্ররোচিত করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। নিহত আবু সাঈদের বাড়ি রংপুর জেলার পীরগঞ্জে। তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়টির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।