মার্কিন কর্মকর্তাদের গ্রাফিতির আর্টবুক উপহার দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সফররত মার্কিন প্রতিনিধিদলকে গত জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানী ঢাকার দেয়ালে ছাত্রদের আঁকা বর্ণিল ও বৈচিত্র্যময় গ্রাফিতির ছবি-সম্বলিত একটি আর্টবুক উপহার দিয়েছেন।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাদের হাতে এ উপহার তুলে দেন।
ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি সংশ্লিষ্টদের এই আর্টবুক প্রকাশের নির্দেশ দেন।
বইটিতে জুলাই-অগাস্ট মাসে ছাত্রদের নেতৃত্বে বিপ্লব চলাকালে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য শহর ও নগরের দেয়ালে তরুণ শিক্ষার্থীদের আঁকা সেরা কিছু শিল্পকর্মের ছবি স্থান পেয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন প্রতিনিধিদলের কাছে গ্রাফিতির ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, 'এসব গ্রাফিতিতে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পাশবিক শক্তিকে প্রতিহত করতে নৃশংস এক বাহিনীর মুখোমুখি আন্দোলন-বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও যুবকদের দাবি-দাওয়া, আবেগ-অনুভূতি, আশা-আকাঙ্ক্ষা চিত্রিত হয়েছে।'
মার্কিন প্রতিনিধিদলকে উদ্দেশ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'আমি আপনাদের ঢাকার দেয়ালগুলো একবার ঘুরে দেখার অনুরোধ করব। এসব গ্রাফিতি এখনও রাজধানীর দেয়ালে-দেয়ালে শোভা পাচ্ছে। এগুলো শুধু বিপ্লবের পরই নয়, আন্দোলন চলাকালেও শিক্ষার্থীরা সরকারি বাহিনীকে অমান্য করে এসব গ্রাফিতি আঁকেন।'
তরুণ চিত্রশিল্পীদের আঁকা-লেখায় ঢাকা সারা দুনিয়ার গ্রাফিতি রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পায়। দেয়ালগুলো পরিণত হয় প্রতিবাদ-বিক্ষোভের বিশাল ক্যানভাসে। সরকারকে নানা শক্তিশালী বার্তা দিতে তারা বিভিন্ন সৃজনশীল ও হৃদয়গ্রাহী স্লোগান ও কবিতা লিখেছে। এসব বার্তা যেন বিপ্লবের চেতনা ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার শিল্পিত প্রতিফলন।
ছাত্ররা দেশবাসীর সমর্থন আদায়ে শিল্পকর্মের মাধ্যমে কিভাবে মুক্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল প্রধান উপদেষ্টা তা স্মরণ করে মার্কিন প্রতিনিধিদলকে বলেন, তরুণদের কাছে রং-তুলি কেনার মত অর্থই ছিল না। সাধারণ মানুষ তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন।'
ছাত্রদের মনের মাধুরী মিশিয়ে দেয়ালে-দেয়ালে ফুটিয়ে তোলা স্বপ্ন-বাসনার এসব নান্দনিক চারুকলা গোটা ঢাকা শহরের চেহারা পাল্টে দেয়।
মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়নবিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ, ইউএসএআইডির উপ-সহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কাউর ও মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের পরিচালক জেরড ম্যাসন।