বাসাবাড়ির বর্জ্য সংগ্রহকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সতর্ক করলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ
সিটি কর্পোরেশনগুলোতে গৃহস্থালির বর্জ্য সংগ্রহকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিশৃঙ্খল নিয়ন্ত্রণে সতর্ক করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।
বর্জ্য সংগ্রহের জন্য নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে না গিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, এর নিয়ন্ত্রণ নিতে অনেকটা পুরোনো দিনের চর দখলের মত অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এ এফ হাসান আরিফ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী এসব দখলদারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, "বাসাবাড়ির বর্জ্য সংগ্রহে সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় দখলদারিত্ব, নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কোন্দল চলছে। এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা কঠোর হবো, প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শরণাপন্ন হবো। কোনোভাবেই বিশৃঙ্খলা হতে দেব না।"
বুধবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকা দক্ষিণ, ঢাকা উত্তর, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন অধিক্ষেত্রে বিভিন্ন নাগরিক সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক শেষে তিনি বলেন, "দখলদারিত্বের এসব কোন্দলের কারণে ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আমরা সিটি কর্পোরেশনগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছি কোনোভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে, বর্জ্য সংগ্রহ নিয়ে এলাকাভিত্তিক দখলদারিত্বের স্থান দেওয়া যাবে না।"
উপদেষ্টা আরও বলেন, "এক হাজারের বেশি ছাত্রের জীবনের উপর দিয়ে আসা এ অভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছিলেন, তাদের মূল দাবি ছিল বৈষম্যহীন সমাজ। সেই বৈষম্যহীন সমাজে কি শপিংমলে গিয়ে প্যাকেটে পাওয়া যায়? অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র জনতার মূল প্রত্যাশা ছিল সংস্কার, যে সংস্কারের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। আর বৈষম্যহীন সমাজ গড়া একটি চলমান প্রক্রিয়া। যে প্রক্রিয়ায় সকলকে দায়িত্ব নিতে হবে।"
তিনি বলেন, "রাস্তার পাশের ফুটপাতগুলো মেরামত জরুরি। আমাদের ঢাকা শহরে ব্লক বা টাইলস দিয়ে ফুটপাত তৈরি করা হয়। কিছুদিন পরে সেই টাইলসের নিচের মাটি বা বালু সরে যায়। তখন সেই ফুটপাতের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে আর চলাচল করা যায় না। দিনের পর ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় থাকে, ফলে পথচারীদের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়।"
ঢাকার অনেক ফুটপাত করা হয় ঢালাইয়ের মাধ্যমে। মাঝে মাঝে ইউলিটি সার্ভিস প্রদানের জন্য এসব ফুটপাত আবার খুঁড়ে ফেলতে হয়। এর ফলে সিটি কর্পোরেশন বা সরকারের নতুন করে ফুটপাত সংস্কারের বরাদ্দ দিতে হয়। এ কারণে সরকারের টাকা অপচয় হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিনি ঢাকার ফুটপাত নির্মাণে নতুন পদ্ধতি নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "ফুটপাত সংস্কারে সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলীরা নতুন কিছু চিন্তা করুন, যা দিয়ে এসব সমস্যার সমাধান করা যাবে এবং উন্নয়নটাও দীর্ঘমেয়াদী হবে।"
বৈঠকে উল্লেখিত চার সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের কাজ করার নানান চ্যালেঞ্জ, সমস্যা, কর্মপদ্ধতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সিটি কর্পোরেশনগুলোর প্রশাসক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা-সহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।