গাজীপুরে দুই কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ, কাজ বন্ধ
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে দুটি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানায় আজ শনিবার (২ নভেম্বর) সকাল থেকে কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করেছেন শ্রমিকরা। হাজিরা বোনাস, বাৎসরিক বেতন, নাইট বিল, টিফিন বিল বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করেছেন কয়েক হাজার শ্রমিক।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর জরুন এলাকার ইসলাম গ্রুপ ও কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা শিল্প গ্রুপ দুটি রপ্তানিমুখী। শনিবার (২ নভেম্বর) সকাল ৮ টার দিকে শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করেন। কিন্তু কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার ভিতরে মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন শুরু করেন।
পরবর্তীতে খবর পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, শিল্প পুলিশ ও গাজীপুর মহানগর পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়।
ইসলাম গ্রুপের শ্রমিকরা জানান, তাদের দাবির মধ্যে একটি হলো ফ্যাক্টরির কয়েকজন ম্যানেজার ও এইচআর অফিসারকে চাকুরিচ্যুত করতে হবে। এছাড়াও সার্ভিস বেনিফিট ১০০ শতাংশ করতে হবে এবং বেসিকের ৬৩ শতাংশ দিতে হবে। পাশাপাশি, হাজিরা বোনাস ১ হাজার টাকা, টিফিন বিল ৫০ টাকা, নাইট বিল ২০০ টাকা, বাৎসরিক বেতন ৫ শতাংশ বাড়ানোসহ ২১ দফা দাবি পেশ করেন তারা।
এছাড়া, কোনাবাড়ীতে অবস্থিত তুসুকা গ্রুপের শ্রমিকরা জানান, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় দেওয়া, বাৎসরিক ১০ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি, ঈদুল ফিতরের ছুটি সর্বনিম্ন ১০ দিন, ১২ রবিউল আওয়াল ও বিশ্ব ইজতেমার মোনাজাতের দিন ছুটি দেওয়া এবং ২ দিন বাধ্যতামূলক পূজার ছুটি দেওয়া সহ ১৬ দফা দাবি দিয়েছেন তারা। এর পরিবর্তে কোনো ধরনের জেনারেল ডিউটি করানো যাবে না বলেও দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তুসুকার এক শ্রমিক বলেন, "আমাদের হাজিরা বোনাস ১ হাজার টাকা, নাইট বিল ২০০ টাকা, টিফিন বিল ৫০ টাকা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২০ দিন করাসহ ১৬ দফা দাবি মানতে হবে। "
এসব বিষয়ে জানতে তুসুকা গ্রুপের পরিচালক তারেক হাসান এবং ইসলাম গ্রুপের এডমিন অফিসার রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কেউ ফোন ধরেননি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর বেক্সিমকো জোনের সহকারী পুলিশ সুপার দীপক চন্দ্র মজুমদার বলেন, "সকাল থেকে মহানগরীর জরুন এলাকায় ইসলাম গ্রুপ এবং কোনাবাড়ীতে তুসুকা গ্রুপের গ্রুপের শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি আদায়ে কারখানার ভিতরে মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। উভয় কারখানার কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা করে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা শুরু করেন।"
পুলিশ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার দীপক চন্দ্র বলেন, "দুপুরের বিরতির আগে ইসলাম গ্রুপের মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবি দাওয়া মেনে নিতে সম্মত হন। আশা করা যায়, শ্রমিকরা কাজে যোগ দিবে।"
তিনি আরও বলেন, "অপরদিকে, তুসুকার মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সাথে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। আশা করা যায়, এ কারখানাতেও আলোচনা করে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।"