নীতিনির্ধারকেরা গণপরিবহন ব্যবহার করেন না, তাই তারা মানুষের ভোগান্তি টের পান না: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
দেশে গণপরিবহন পরিচালনার নীতিনির্ধারকদের বেশিরভাগই রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবহার করেন না, ফলে তারা মানুষের ভোগান্তি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
সংগঠনটি বলেছে, ৫৩ বছরের বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন খাতে টেকসই কোনো কৌশল তৈরি হয়নি। আইন-কানুন এবং নীতি-নৈতিকতার প্রয়োগেও ঘাটতি রয়েছে।
শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীতে নিজেদের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ জাতীয় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, যারা গণপরিবহন নীতি-সিদ্ধান্ত নেন, তারা নিজেরা গণপরিবহন ব্যবহার না করায় এ ভোগান্তির আসল চিত্র বুঝতে পারেন না।
তিনি আরও বলেন, 'গণপরিবহন ৫৩ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করে, ব্যক্তিগত যানবাহন মাত্র ১১ শতাংশ। তবু ব্যক্তিগত যানবাহন ৭০ শতাংশ সড়ক দখল করে চলে, যা সাধারণ মানুষের প্রতি চরম বৈষম্য।'
অধ্যাপক মাহবুব আরও অভিযোগ করেন, বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রণকারী একটি টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠান হলেও এর চেয়ারম্যান প্রায়ই প্রশাসনিক ক্যাডার থেকে নিয়োগ পান, যাদের সড়ক বা মোটরযান সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান থাকে না। এর ফলে চেয়ারম্যানের পক্ষে বিষয়গুলো বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে।
ফাউন্ডেশন বিআরটিএ চেয়ারম্যান পদে সড়ক ও মোটরযানে অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নিয়োগ এবং প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ্য জনশক্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণে চালক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করার দাবি জানানো হয়েছে।
অধ্যাপক মাহবুব বলেন, ৫৩ বছরেও বাংলাদেশে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল তৈরি হয়নি এবং সড়ক পরিবহন খাতে আইন ও নীতির প্রয়োগ যথাযথ নয়।
'একটি স্বার্থবাদী গোষ্ঠী গোটা গণপরিবহন খাতকে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির নৈরাজ্যে পরিণত করেছে। রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কোম্পানিভিত্তিক বাস পরিচালনার উদ্যোগে বাধা সৃষ্টি করছে এ গোষ্ঠী।'
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন মনে করে, রাজধানীতে কোম্পানিভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু হলে ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার নিরুৎসাহিত হবে, যা যানজট কমাতে সাহায্য করবে।
সংগঠনটি বলেছে, বিআরটিএর প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কারণে এ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ ছয় বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ শুধু কমিটি গঠন ও সুপারিশমালার মধ্যেই আটকে আছে।