দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার সরঞ্জাম আমদানি সীমাবদ্ধ করেছে ভারত
প্রযুক্তি খাতে দেশীয় উৎপাদন উৎসাহিত করতে কম্পিউটার এবং ল্যাপটপ আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত সরকার।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ল্যাপটপ, ট্যাব, ব্যক্তিগত কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস আমদানিতে এখন থেকে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে। পূর্বে, এই ধরনের পণ্য আমদানি সীমাবদ্ধ ছিল না।
নিয়ম পরিবর্তনের জন্য কোনো কারণ জানায়নি মন্ত্রণালয়। তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার 'মেইক ইন ইন্ডিয়া' প্রচারাভিযানে গতি আনছেন। এই প্রকল্প আরো কর্মসংস্থান তৈরিতে স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করে। এর আগে স্মার্ট টিভি আমদানিতে অনুরূপ বিধিনিষেধ আরোপ হয়েছিল।
রয়টার্সের মতে, এপ্রিল-জুন এই তিন মাসে ভারতের ইলেকট্রনিক আমদানি দাঁড়িয়েছে ১৯.৭ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২২ সালের একই সময়ের চেয়ে ৬.২৫ শতাংশ বেশি।
অ্যাপল, স্যামসাংসহ ভারতে শীর্ষ ল্যাপটপ বিক্রেতাদের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়েছে সিএনএন। তবে তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
বৈশ্বিক কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ সাপ্লাই চেইন সুরক্ষিত করতে চীন ছাড়া অন্যান্য দেশে নজর দিচ্ছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদন বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছে ভারত।
অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অনুসারে, আগামী দশকে ভারতের কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১০০ কোটি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৃহৎ এবং তরুণ এই শ্রমশক্তি চীনের বিকল্প উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে ভারতকে বৈশ্বিক কোম্পানিগুলোর কাছে একটি শক্তিশালী জায়গায় নিয়ে যাবে।
গত জানুয়ারিতে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল বলেছিলেন, অ্যাপল ইতিমধ্যেই ভারতে তাদের ৫ থেকে ৭ শতাংশ পণ্য উৎপাদন করছে।
এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যদি আমি ভুল না করি, তারা (অ্যাপল) ভারত থেকে ২৫ শতাংশ পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েছে।
জুন মাসে, যুক্তরাষ্ট্রের চিপ প্রস্তুতকার মাইক্রোন পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে একটি নতুন কারখানা স্থাপনের ঘোষণা করে।
মাইক্রোন জানায়, কোম্পানি ৮২৫ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করবে এবং পরবর্তী কয়েক বছরে মাইক্রোনে ৫,০০০ নতুন চাকরি এবং এটি কেন্দ্র করে আরো ১৫ হাজার চাকরি তৈরি হবে।
বিশ্বের বৃহত্তম কাস্টমাইজড ইলেকট্রনিক্স পণ্য নির্মাতা ফক্সকন, যারা অ্যাপলের প্রধান সরবরাহকারী,এই প্রতিষ্ঠানও ভারতে উৎপাদন কার্যক্রম প্রসারিত করতে চাইছে।
গত মাসে ভারতের ভেদান্ত গ্রুপের সাথে বড় বিনিয়োগের উদ্যোগ থেকে সরে আসার ঘোষণা দিলেও ফক্সকন এখনো বিনিয়োগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে। ভারতে সেমিকন্ডাকটর বা ইলেকট্রনিক ডিসপ্লে উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনে প্রণোদনা দেওয়া সরকারি প্রকল্পে আবেদনও করেছে।