বিচারবিভাগে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের অভিযোগের তদন্ত করবে পাকিস্তান, জানালেন আইনমন্ত্রী
পাকিস্তানের প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা দেশটির আদালতের বিচারিক সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করে ও বিচারকদের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেছিলেন হাইকোর্টের ছয়জন বিচারক। এ অভিযোগের তদন্ত করতে সরকার একটি তদন্ত কমিশন গঠন করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারার। সেখানে তিনি বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ইসা এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সম্প্রতি ইসলামাবাদ হাইকোর্টের ছয়জন বিচারক ইসার কার্যালয়ে একটি চিঠি দেওয়ার পর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, পাকিস্তানের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) রাজনৈতিক মামলাগুলোতে তাদের পক্ষে রায় দিতে বিচারকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে।
এ অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য নিতে সংবাদসংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া অফিস সাড়া দেয়নি।
হুমকি দেওয়ার উদাহরণ হিসেবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে পাঠানো চিঠিতে ছয় বিচারক বলেছেন, গত বছর পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক মামলা আমলে নিতে রাজি না হওয়ায় আইএসআইয়ের সদস্যরা দুজন বিচারপতিকে তাদের 'বন্ধু ও স্বজনদের' মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখিয়েছে।
ছয় বিচারপতি আরও বলেছেন, তারা এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা সম্পর্কে তাদের প্রধানকে জানান এবং প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করে 'বিচারিক সিদ্ধান্তে আইএসআইয়ের হস্তক্ষেপ নিয়ে' নিজেদের উদ্বেগের কথাও জানান।
প্রধান বিচারপতি আশ্বাস দেওয়ার পরও আইএসআই বিচারিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ চালিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন ছয় বিচারক।
ইমরান খানের প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজও (পিএমএল-এন) এর আগে আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছিল।
আইনমন্ত্রী তারার বলেছেন, 'আমরা চাই এ অভিযোগের পরিপূর্ণ তদন্ত হোক, কারণ আমরাও এর ভুক্তভোগী হয়েছি।'
তিনি জানান, শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।