যে দুই পিস্তল দিয়ে নেপোলিয়ন আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন ১.৭ মিলিয়ন ইউরোতে বিক্রি হলো
আত্মহত্যা করতে নেপোলিয়ন যে দুটি পিস্তল ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিলেন, সে পিস্তল দুটি রোববার (৫ জুলাই) ফ্রান্সে ১.৬৯ মিলিয়ন ইউরোতে বিক্রির জন্য নিলামে তুলেছিল নিলাম হাউজ ওসেনাট। এর আগে ফ্রান্সের সরকার পিস্তলগুলোর রপ্তানি নিষিদ্ধ করে জাতীয় সম্পদ হিসেবে রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল।
প্যারিসের দক্ষিণের ফন্টেইনব্লুতে আয়োজিত নিলামে পিস্তল দুটি কিনে নেওয়ার পর ক্রেতার পরিচয় প্রকাশ করা না হলেও ফিসহ এদের চূড়ান্ত বিক্রয় মূল্য আনুমানিক ১.২ থেকে ১.৫ মিলিয়নের চেয়ে বেশি ছিল।
সোনা ও রুপা দিয়ে মোড়ানো অলংকৃত পিস্তলগুলোতে সম্পূর্ণ সাম্রাজ্যিক পোশাকে সজ্জিত নেপোলিয়নের ছবি খোদাই করা আছে।
১৮১৪ সালে নেপোলিয়ন পিস্তলগুলো ব্যবহার করে প্রায় আত্মহত্যা করতে নিয়েছিলেন কারণ বিদেশি বাহিনী তার সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে প্যারিস দখল করায় তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
নিলাম বিশেষজ্ঞ জিন-পিয়ের ওসেনাট এএফপিকে বলেছেন, 'তার পরাজয়ের পর, নেপোলিয়ন এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি আত্মহত্যার জন্য এই পিস্তলগুলো ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার গ্র্যান্ড স্কয়ার পিস্তল থেকে গান পাউডার সরিয়ে দেয়।'
ওসেনাট বলেন, পরবর্তীতে নেপোলিয়ন বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত বমি করে বেঁচে যান। পরে তিনি তার আনুগত্যের জন্য ধন্যবাদ জানাতে তার স্কয়ারকে পিস্তলটি দিয়েছিলেন।
ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর নেপোলিয়ন ইতালির উপকূলের এলবা দ্বীপে নির্বাসিত হন। কিন্তু ১৮১৫ সালে ওয়াটারলু যুদ্ধে ব্রিটিশদের কাছে পরাজিত হওয়ার আগে অল্প সময়ের জন্য ফ্রান্সে ফিরে আসেন। ছয় বছর পরে তিনি সেন্ট হেলেনায় নির্বাসনে মারা যান।
নেপোলিয়ন স্মারক সংগ্রাহকদের কাছে খুব বেশি জনপ্রিয়। উদাহরণস্বরূপ, তার একটি বিখ্যাত কালো 'বাইকর্ন' টুপি গত বছরের নভেম্বর মাসে ১.৯ মিলিয়নে ইউরোতে বিক্রি হয়েছিল।
পিস্তল বিক্রির আগে ফ্রান্সের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এগুলোকে জাতীয় সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে এবং রপ্তানি নিষিদ্ধ করে। শনিবার (৪ জুলাই) সরকারের অফিসিয়াল জার্নালে প্রকাশিত এ সিদ্ধান্তের অর্থ হল, নতুন মালিকের কাছ থেকে সেগুলো কেনার প্রস্তাব দেওয়ার জন্য ফরাসি সরকারের কাছে ৩০ মাস সময় রয়েছে। তবে অজানা ক্রেতা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রাখেন।
ফ্রান্সের জাতীয় সম্পদকে কেবল সাময়িকভাবে দেশটির বাইরে নেওয়া যেতে পারে। সেটিকে পরে অবশ্যই দেশে ফিরিয়ে আনতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওসেনাট নিলাম ঘরের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, 'জাতীয় সম্পদ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হলে একটি বস্তুর মূল্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।'
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়