বাংলাদেশ-ভিয়েতনামের মতো ছোট প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে পিছিয়ে পড়ছে ভারত: বিশ্বব্যাংক
ভারতের অর্থনীতি দ্রুত বর্ধনশীল হলেও, সেটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্ব বাণিজ্যে দেশটির অংশীদারিত্ব বাড়েনি। বরং স্বল্প খরচে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে পিছিয়ে পড়ছে ভারত।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত এক দশকে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও দেশটির পণ্য ও পরিষেবার বাণিজ্য মোট দেশজ উৎপাদনের শতাংশ হিসাবে হ্রাস পাচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০০২ সালে বিশ্বব্যাপী ভারতের পোশাক, চামড়া, বস্ত্র এবং জুতা রপ্তানির হার ছিল ০.৯ শতাংশ, যা ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ ৪.৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল। কিন্তু ২০২২ সালে সেটি কমে গিয়ে ৩.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এর বিপরীতে, ২০২২ সালে বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনাম থেকে এসব পণ্য রপ্তানির হার ছিল যথাক্রমে ৫.১ শতাংশ এবং ৫.৯ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংক বলছে, রপ্তানি বাড়াতে এবং চীন শ্রমঘন উৎপাদন থেকে সরে আসার সুবিধা নেওয়ার জন্য ভারতকে বাণিজ্যের খরচ কমানোর পাশাপাশি শুল্ক ও অ-শুল্ক বাধা কমাতে হবে এবং বাণিজ্য চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ নোরা দিহেল নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের বলেন, "এটি এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে ভারত মনোযোগ দিতে পারে। এটি একটি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।"
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লক্ষ্য, ভারতকে একটি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা যেহেতু অনেক ব্যবসা চীন থেকে তাদের সরবরাহ চেইন সরিয়ে নিচ্ছে। মোদির সরকার ইলেকট্রনিক্স এবং চিপ তৈরির মতো শিল্পে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি দিচ্ছে।
তবে, ভারত রপ্তানি খাতে ক্রমবর্ধমান পুঁজির বিনিয়োগ বাড়ালেও দেশটির লাখ লাখ বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারছে না। বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০১২ সালে ভারতে রপ্তানির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কর্মসংস্থান ছিল মোট দেশের কর্মসংস্থানের ৯.৫ শতাংশ, যা ২০২০ সালে কমে গিয়ে ৬.৫ শতাংশে নেমেছে।
বিশ্বব্যাংক আশা করছে, ভারতের অর্থনীতি বর্তমান অর্থবছরে (যা মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত চলব) ৭ শতাংশ হারে দ্রুত বৃদ্ধি অব্যাহত রাখবে, যা গত বছর ৮ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে দেশটির প্রবৃদ্ধির হার আনুমানিক ৬.৭ শতাংশ হতে বলে বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।