উত্তর কোরিয়ার সরবরাহ করা অস্ত্রে মজুত বাড়াচ্ছে রাশিয়া: জার্মান জেনারেল
উত্তর কোরিয়া থেকে সরবরাহকৃত অস্ত্র রাশিয়াকে ইউক্রেনে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সাহায্য করেছে এবং এর ফলে রাশিয়া নিজস্ব অস্ত্রাগারের মজুত বাড়াতে সক্ষম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জার্মানির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা।
সোমবার (৯সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়া সফরের সময় জার্মানির প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল কার্স্টেন বয়া বলেন, উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রগুলো কার্যকরী না হলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিম জং উনের কাছে অস্ত্র চেয়ে সাহায্য চাইতেন না।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে সাংবাদিকদের জেনারেল কার্স্টেন বলেন, "ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের জন্য অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ। এটি রাশিয়াকে শক্তিশালী করছে কারণ তারা তাদের অস্ত্রের মজুদ পরিপূর্ণ রাখতে সক্ষম হচ্ছে।"
ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ ও স্বাধীন বিশ্লেষকরা বলছেন, কিম জং উন মস্কো থেকে অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তার বিনিময়ে রাশিয়াকে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা করছেন।
গত সপ্তাহে মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্র সচিব রবার্ট কোয়েপকে জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে উত্তর কোরিয়া অন্তত ১৬,৫০০ কন্টেইনার গোলাবারুদ এবং সংশ্লিষ্ট সামরিক সরঞ্জাম রাশিয়ায় পাঠিয়েছে এবং রাশিয়া সেই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে ৬৫টির বেশি ইউক্রেনের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে নিক্ষেপ করেছে।
মস্কো এবং পিয়ংইয়ং সরাসরি অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার করেছে, যা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন হবে।
দক্ষিণ কোরিয়াকে সরাসরি ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য চাপ দিয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে জেনারেল কার্স্টেন বলেন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, পদাতিক যুদ্ধ বাহন এবং অন্যান্য অস্ত্র যুদ্ধের জন্য কার্যকর হতে পারে এবং প্রতিটি দেশকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত– ইউক্রেনের এমন মতামত তিনি দক্ষিণ কোরিয়াকে জানিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া প্রাণঘাতী নয় এমন সরঞ্জাম এবং সহায়তা প্রদান করছে কিন্তু বলেছে, রাশিয়া উত্তর কোরিয়া থেকে যে সাহায্য নিচ্ছে তা যদি সীমা অতিক্রম করে তবেই দেশটি অস্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করবে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত জর্জ শ্মিট বলেন, "আমরা উত্তর কোরিয়াকে বলেছি, তাদের রাশিয়াকে দেওয়া নিরাপত্তা সহযোগিতার সরাসরি প্রভাব আমাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর পরতে পারে।"
দক্ষিণ কোরিয়া সফরের সময় জেনারেল কার্স্টেন দুটি জার্মান যুদ্ধজাহাজ পরিদর্শন করেছেন। জাহাজগুলো দক্ষিণ চীন সাগর পার হয়ে ম্যানিলায় যাওয়ার পথে সিউল বন্দরে নোঙর করা হয়।
যুদ্ধজাহাজগুলো বিতর্কিত তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে যাবে কি না সেটি জানাতে জার্মান জেনারেল অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে এমনটি ঘটলে এটি ২০ বছরেরও বেশি সময় পরে কোনো জার্মান যুদ্ধজাহাজের প্রথম এ ধরনের সফর হবে।
চীন গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত তাইওয়ানকে নিজের সার্বভৌমত্বের অংশ হিসেবে দাবি করে এবং প্রায় ১৮০ কিমি (১১০ মাইল) বিস্তৃত এই জলপথ নিজের বলে দাবি করে।
তাইওয়ান চীনের সার্বভৌমত্বের দাবির বিরোধিতা করে এবং বলেছে, কেবলমাত্র তাইওয়ানের অধিবাসীরা তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারবে।