রাহুল-কোহলির ব্যাটে বড় হলো বাংলাদেশের লক্ষ্য
আবহাওয়া বিবেচনায় টস জিতে ফিল্ডিং নিলেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণ করে প্রথম ওভারে মাত্র ১ রান খরচা করলেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারেই রানের খোঁজ করে নেওয়া ভারত একটু একটু করে ইনিংস সাজিয়ে শেষ পর্যন্ত বড় সংগ্রহ গড়লো।
বুধবার অ্যাডিলেড ওভালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলির ব্যাটে ৬ উইকেটে ১৮৪ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছে ভারত। সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এ দুজনই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। এই ম্যাচে তাসকিন অসাধারণ বোলিং করলেও বাংলাদেশের বাকি বোলার সেই পথে হাঁটতে পারেননি।
বল হাতে শুরুটা দারুণ হয় বাংলাদেশের। মেঘলা আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার ব্যাপারটি কাজে লাগান তাসকিন আহমেদ। প্রথম ওভারে তার খরচা মাত্র ১ রান। যদিও এই ধারায় থাকা হয়নি। দ্বিতীয় ওভারে ৯ রান খরচা করেন সৌম্যর বদলে একাদশে সুযোগ পাওয়া শরিফুল ইসলাম।
তৃতীয় ওভারে সহজ সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। তাসকিনের বলে রোহিত শর্মার তোলার সহজ ক্যাচ মাটিতে ফেলেন হাসান মাহমুদ। তরুণ এই পেসার অবশ্য দলকে এই হতাশায় বেশি সময় থাকতে দেননি। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলেই ভারতের অধিনায়ককে নিজের শিকারে পরিণত করেন তিনি।
৩.২ ওভারে স্কোরকার্ডে ১১ রান, নেই এক উইকেট। চাপেই পড়ে যায় ভারত। তবে এই চাপ কাটিয়ে উঠতে সময় নেননি আরেক ওপেনার লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়ে তোলেন এ দুজন। এর মাঝে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন রাহুল। খারাপ সময় পার করতে থাকা ডানহাতি এই ওপেনার ৩২ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫০ রান করে আউট হন।
তাকে ফেরান সাকিব। এরপর কোহলির সঙ্গে যোগ দিয়ে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা সূর্যকুমার যাদবকেও ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক। অবশ্যই এরআগেই ১৬ বলে ৪টি চারে ৩০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ফেলেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান। এদিন হার্দিক পান্ডিয়াকে টিকতে দেননি হাসান। ৬ বলে ৫ রান করা হার্দিককে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তরুণ এই পেসার।
অন্য প্রান্তে উইকেট পড়তে থাকলেও আপন মনে খেলে যান কোহলি। ১৭তম ওভারে গিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৩৬তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তারকা এই ব্যাটসম্যান। এর আগে ১৬ রান করে মাইলফলক গড়েন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এক হাজার রান পূর্ণ হয়েছে কোহলির।
এক হাজার রান পূর্ণ করার পাশাপাশি কোহলি হয়ে গেছেন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহও (১০৬৫)। এ পথে তিনি পেছনে ফেলেছেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি মাহেলা জয়াবর্ধনেকে। ১ হাজার ১৬ রান নিয়ে দুই নম্বরে আছেন জয়াবর্ধনে। শেষ পর্যন্ত ৪৪ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় ৬৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক। শেষ দিকে ৬ বলে ১৩ রান করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
উইকেট না পেলেও চোখ ধাঁধানো বোলিং করেন তাসকিন আহমেদ। ডানহাতি এই পেসার ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান খরচা করেন। ২৪ বলের মধ্যে ১৬টি ডেলিভারিই ডটবল করেন তিনি। হাসান মাহমুদ ৩টি উইকেট নিলেও খরুচে ছিলেন। ৪ ওভারে তার খচরা ৪৭ রান। ২ উইকেট নেওয়া সাকিব ৪ ওভারে ৩৩ রান দেন। মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩১ রানে উইকেটশূন্য থেকে গেছেন।
শরিফুলের ওপর দিয়ে ঝড় গেছে। অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৪ ওভারে ৫৭ রান দেন তিনি, পাননি কোনো উইকেট। তাতে অস্বস্তির এক রেকর্ডে নাম উঠে গেছে তার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এক ইনিংসের সবচেয়ে বেশি খরচা করার দিক থেকে শরিফুল এখন দুই নম্বরে। সবচেয়ে বেশি রান দিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৬৩ রান দেন তিনি।