এক নজরে বিশ্বকাপের ২১ ফাইনাল
অনেক ঘটন-অঘটনের কাতার বিশ্বকাপ শেষের পথে। আর মাত্র একটি ম্যাচের অপেক্ষা। শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জেতার ম্যাচ, যেখানে মুখোমুখি হবে দুটি করে বিশ্বকাপ জেতা আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। আজ (১৮ ডিসেম্বর) লুসাইল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হবে শিরোপার লড়াই। এই ম্যাচ দেখার আগে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আগের ২১টি বিশ্বকাপ ফাইনাল কেমন ছিলো।
১৯৩০ বিশ্বকাপ (উরুগুয়ে-আর্জেন্টিনা)
১৯৩০ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয়। ঘরের মাঠে দাপট দেখিয়ে ফাইনালে উঠে যায় আয়োজক দেশ উরুগুয়ে। ফাইনালে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় আর্জেন্টিনাকে। ছয় গোলের সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় উরুগুয়ে। তাদের হয়ে গোল করেন দারাদো, সেয়া, ইরিয়ার্তে ও কাস্ত্রো। আলেবিসেলেস্তেদের পক্ষে গোল করেন পেউসেয়ে ও স্তাবিয়ে।
১৯৩৪ বিশ্বকাপ (ইতালি-চেকোস্লোভাকিয়া)
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে ওঠে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও চেকোস্লোভাকিয়া। রোমাঞ্চকর সেই ফাইনালে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে সমতা থাকে। ৭১তম মিনিটে গিয়ে গোল করে চেকোস্লোভাকিয়াকে এগিয়ে নেন পুচ। ১০ মিনিট পর ইতালিকে সমতায় ফেরান অর্সি। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে, যেখানে গোল করে ইতালিকে শিরোপা এনে দেন শিয়াভিও।
১৯৩৮ বিশ্বকাপ (ইতালি-হাঙ্গেরি)
টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠে ইতালি। শিরোপার লড়াইয়ে হাঙ্গেরিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় তারা। উত্তেজনায় ঠাসা সেই ম্যাচে হয় ৬ গোল। গোল বন্যার ম্যাচে হাঙ্গেরিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জেতে ইতালি। তাদের পক্ষে জোরা গোল করেন কোলাওসি ও পিওলা। হাঙ্গেরির হয়ে গোল করেন টিটকস ও সারাওসি।
১৯৫০ বিশ্বকাপ (উরুগুয়ে-ব্রাজিল)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯৪২ ও ১৯৪৬ সালে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়নি। ১২ বছর পর ১৯৫০ সালে আয়োজন করা হয় বিশ্বকাপের চতুর্থ আসর। এই আসরটি রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে হওয়ায় ছিল না কোনো আনুষ্ঠানিক ফাইনাল ম্যাচ। শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয় উরুগুয়ে ও ব্রাজিল। প্রথমে পিছিয়ে পড়েও সেলেসাওদের ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নের মুকুট জেতে উরুগুয়ে। ৪৭তম মিনিটে গোল করে ব্রাজিলকে এগিয়ে নেন ফ্রিয়াসা। কিন্তু ৬৬তম মিনিটে শিয়াফিনো ও ৭৯তম মিনিটে ঘিগিয়া গোল করে উরুগুয়ের জয় নিশ্চিত করেন।
১৯৫৪ বিশ্বকাপ (পশ্চিম জার্মানি-হাঙ্গেরি)
সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠে পশ্চিম জার্মানি। তাদের প্রতিপক্ষ ছিল দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালের টিকেট কাটা হাঙ্গেরি। এবারও হাঙ্গেরির স্বপ্নভঙ্গ হয়। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ৩-২ গোলের জয়ে শিরোপা উৎসবে মাতে পশ্চিম জার্মানি। তাদের হয়ে জোরা গোল করেন রাহন, বাকি গোলটি করেন মরলক। হাঙ্গেরির পক্ষে গোল দুটি করেন কিংবদন্তি ফেরেঙ্ক পুসকাস ও জলতান জিবোর।
১৯৫৮ বিশ্বকাপ (ব্রাজিল-সুইডেন)
ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে চমক জাগানিয়ার পারফরম্যান্সে ফাইনালে উঠে যায় সুইডেন। কিন্তু দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠা ব্রাজিলের গতিময় ফুটবলের সামনে কুলাতে পারেনি তারা। তাদের জালে গোল বন্যা বইয়ে দেয় সেলেসাওরা, তুলে নেয় ৫-২ গোলের বিশাল জয়। জোরা গোল করেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার পেলে ও ভাভা। বাকি গোলটি করেন জাগালো। সুইডেনের হয়ে জালের দেখা পান লাইডম ও সিমোনসন।
১৯৬২ বিশ্বকাপ (ব্রাজিল-চেকোস্লোভাকিয়া)
পরের বিশ্বকাপেও ব্রাজিলের দাপট। পেলে ইনজুরিতে পড়লেও জিতো, ভাভাদের নিয়ে গড়া তারকা ঠাসা দলটি তরতর করে উঠে যায় ফাইনালে। শিরোপার লড়াইয়ে তাদের সামনে পড়ে চেকোস্লোভাকিয়া। দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠা দলটি ব্রাজিলের ছন্দময় ফুটবলের সামনে টিকতে পারেনি। ৩-১ গোলের জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা উৎসবে মাতে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের দেশটি। ব্রাজিলের হয়ে একটি করে গোল করেন আমারিলদো, জিতো ও ভাভা। চেকোস্লোভাকিয়ার পকে একমাত্র গোলটি করেন মাসোপুস্ত।
১৯৬৬ বিশ্বকাপ (ইংল্যান্ড-পশ্চিম জার্মানি)
ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে অসামান্য ফুটবল খেলে ফাইনালে উঠে যায় ইংল্যান্ড। প্রথমবারের মতো শিরোপার লড়াইয়ে তাদের সামনে বড় বাধা হিসেবে হাজির হয় পশ্চিম জার্মানি। শুরুতে পিছিয়ে পড়েও রোমাঞ্চকর সেই ফাইনালে ৪-২ গোলের জয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জেতে ইংলিশরা। নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলে সমতা থাকে। অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে জিওফ্রে হার্স্টের জাদুকরী পারফরম্যান্সে স্বপ্নের বিশ্বকাপ জিতে নেয় ইংল্যান্ড। অতিরিক্ত সময়ে দুটি গোল করাসহ হ্যাটট্রিক করেন হার্স্ট, বাকি গোলটি করেন স্ট্যানফোর্ড পিটার্স। পশ্চিম জার্মানির পক্ষে গোল করেন হেলমাট হলার ও ওলফগ্যাং ওয়েবের।
১৯৭০ বিশ্বকাপ (ব্রাজিল-ইতালি)
মেক্সিকোয় অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপে চতুর্থবারের মতো ফাইনালে ওঠে ব্রাজিল। ততোদিনে দুটি বিশ্বকাপ জিতে নেওয়া ফুটবল পাগল দেশটির ফাইনালে মুখোমুখি হয় ইতালির। অনেকটা একপেশে ম্যাচে ৪-১ গোলের জয়ে তৃতীয় শিরোপা ঘরে তোলে সেলেসাওরা। দেশের মতো পেলেও জেতেন তিনটি শিরোপা, যা ফুটবল ইতিহাসের প্রথম এবং শেষ কীর্তি হয়ে টিকে আছে এখনও। ওই ম্যাচে ব্রাজিলের পক্ষে গোল করেন পেলে, অলিভিয়েরা নুনেস, ভেনচুরা ফিলহো ও কার্লোস আলবার্তো। ইতালির পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন রবার্তো বনিসেগনা।
১৯৭৪ বিশ্বকাপ (পশ্চিম জার্মানি-নেদারল্যান্ডস)
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে দাপট দেখায় জার্মানি, উঠে যায় ফাইনালে। আগের দুই প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হলেও এবার আর সোনালী শিরোপা হাতছাড়া করেনি তারা। উত্তেজনায় ঠাসা ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরে জার্মানি। ম্যাচের সবগুলো গোলই হয় প্রথমার্ধে। জার্মানির পক্ষে গোল করেন পল ব্রেইটনার ও কিংবদন্তি জার্ড মুলার। নেদারল্যান্ডসের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন জ্যাকোবাস নিসকেন্স।
১৯৭৮ বিশ্বকাপ (আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস)
প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা আর্জেন্টিনা দীর্ঘদিন ফাইনালে উঠতে পারেনি। ৪৮ বছর পর ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে আলবিসেলেস্তেরা। এই আসরেও ফাইনালে ওঠে আগের আসরে রানার্স আপ হওয়া নেদারল্যান্ডস। এবারও তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতে প্রথমবারের মতো সেরার মুকুট জেতে আর্জেন্টিনা। জোরা গোল করেন মারিও কেম্পেস, একটি গোল দেন রিকার্দো বার্তোনি। নেদারল্যান্ডসের পক্ষে একমাত্র গোলটি দেন উইলেম নানিঙ্গা।
১৯৮২ বিশ্বকাপ (ইতালি-পশ্চিম জার্মানি)
স্পেনে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে ইতালি ও পশ্চিম জার্মানি। আগের তিনবারে একবার শিরোপা জেতা জার্মানির চতুর্থ ফাইনালেও সঙ্গী হয় হতাশা। ইতালির দাপটের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি তারা। পুরো ম্যাচজুড়ে রাজত্ব করা ইতালি ৩-১ গোলে জিতে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তোলে। তাদের হয়ে গোল করেন কিংবদন্তি পাওলো রসি, মার্কো তারতেল্লি ও আলেহান্দ্রো আলতোবেল্লি। জার্মানির পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন পল ব্রেইটনার।
১৯৮৬ বিশ্বকাপ (আর্জেন্টিনা-পশ্চিম জার্মানি)
এই বিশ্বকাপের বর্ণনা না দিলেও চলে, দিয়েগো ম্যারাডোনার অনন্য ফুটবল প্রদর্শনীতে বিশ্বকাপটি চিরভাস্বর হয়ে আছে। আগের আসরের রানার্স আপ পশ্চিম জার্মানি এবারও ফাইনালে ওঠে। উত্তেজনায় ঠাসা এই ফাইনালে শেষ হাসি ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনা। ৩-২ গোলে জিতে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপার স্বাদ নেয় তারা। আর্জেন্টিনার হয়ে একটি করে গোল দেন লুইস ব্রাউন, ফ্রান্সিসকো ভালদানো ও লুইস বুরুচাগা। জার্মানির পক্ষে গোল দুটি দেন কার্ল হেইনজ ও রুডি ভলার।
১৯৯০ (পশ্চিম জার্মানি-আর্জেন্টিনা)
এই বিশ্বকাপের ফাইনালেও আগের দুই দলকে দেখে ফুটবল দুনিয়া। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা পশ্চিম জার্মানি ও আর্জেন্টিনার শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়। প্রতিশোধের নেশায় মরিয়া জার্মানি এবার আর্জেন্টিনাকে হতাশায় ডুবিয়ে শিরোপা জিতে নেয়। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেন আন্দ্রেয়াস ব্রেহমে।
১৯৯৪ বিশ্বকাপ (ব্রাজিল-ইতালি)
যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ দিয়ে দীর্ঘদিনের অপেক্ষা ফুরায় ব্রাজিলের। ২৪ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে ব্রাজিল। ইতালিও ফাইনালের টিকেট কাটে ১২ বছর পর। অপেক্ষা ফুরাতে মরিয়া দুই দলের লড়াই হয় সমানে সমান। কিন্তু নির্ধারিত ৯০ মিনিট গোলশূন্যই থেকে যায়। অতিরিক্ত সময়েও জালের ঠিকানা পায়নি কোনো দল। টাইব্রেকারে গিয়ে কপাল পোড়ে ইতালির। পেনাল্টি শুট আউটে ৩-২ গোলে জিতে শিরোপা উৎসবে মাতে ব্রাজিল।
১৯৯৮ বিশ্বকাপ (ফ্রান্স-ব্রাজিল)
এই বিশ্বকাপে ফরাসী সৌরভে মুখরিত হয়ে ওঠে ফুটবল দুনিয়া। নান্দনিক ফুটবল খেলে ফাইনালে ওঠে দিদিয়ের দেশমের ফ্রান্স, যার কোচিংয়ে এবারের বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠেছে ফরাসী। সেই ফাইনালে ব্রাজিলকে রীতিমতো উড়িয়ে দেয় ফ্রান্স। কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানের জাদুতে অসহায় হয়ে পড়ে সেলেসাওরা। জোড়া গোল করেন জিদান, বাকি গোলটি করেন লরেন্ত পেতিত।
২০০২ বিশ্বকাপ (ব্রাজিল-জার্মানি)
প্রথমবারের মতো এশিয়াতে আয়োজিত হয় বিশ্বকাপ। যৌথভাবে ফুটবল মহাযজ্ঞ আয়োজন করে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। এবার ব্রাজিলের দাপট দেখে ফুটবল দুনিয়া। সাম্বার তালে তালে ফুটবলমোদীদের মাত করে রাখেন রোনালদো, রিভালদো, কার্লোসরা। ফাইনালে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো শিরোপা জেতে ব্রাজিল। সেলেসাওদের হয়ে দুটি গোলই করেন বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা রোনালদো।
২০০৬ বিশ্বকাপ (ইতালি-ফ্রান্স)
এই বিশ্বকাপের ফাইনালটি বিভিন্ন কারণে স্মরণীয়। এই ফাইনালে ইতালির মর্তো মাতেরাজ্জিকে মাথা দিয়ে ঢুস দিয়ে লাল কার্ড দেখেন জিনেদিন জিদান। নির্ধাতি সময়ে দুই দলের পক্ষে এই দুজনই গোল দেন। সমতায় শেষ হওয়া ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত সময়েও থাকে একই ব্যবধান। টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৫-৩ গোলে গোলে হারিয়ে চরতুর্থবারের মতো শিরোপা জেতে ইতালি।
২০১০ বিশ্বকাপ (স্পেন-নেদারল্যান্ডস)
এই বিশ্বকাকে তিকি তাকায় ফুটবল দুনিয়াকে মাত করে রাখে স্পেন। ইউরো চ্যাম্পিয়নরা শৈল্পিক ফুটবলে ফাইনালে ওঠে। শিরোপার লড়াইয়ে তাদের দেখা হয় দুর্দান্ত ছন্দে থাকা নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে। তুমুল উত্তেজনার ম্যাচে অবিরত আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ হলেও নির্ধারিত ৯০ মিনিট গোলশূন্য থেকে যায়, ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ১১৬তম মিনিটে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার গোলে ১-০ গোলের জয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ নেয় স্পেন।
২০১৪ (জার্মানি-আর্জেন্টিনা)
এই আসরে লম্বা অপেক্ষার ইতি টানে আর্জেন্টিনা, ২৪ বছর পর ফাইনালে ওঠে তারা। শিরোপার লড়াইয়ে লিওনেল মেসির দলের দেখা হয় পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বী জার্মানির বিপক্ষে। মেসির জাদুমাখা পারফরম্যান্সের পরও হতাশায় ডুবতে হয় আর্জেন্টিনাকে। নির্ধারিত সময়ে কোনো দলই জালে বল পাঠাতে পারেনি। অতিরিক্ত সময়ে বদলি হিসেবে নামা মারিও গোটশে ১১৩তম মিনিটে গোল করে জার্মানির ১-০ গোলের জয় নিশ্চিত করেন। চতুর্থবারের মতো শিরোপা উল্লাসে মাতে জার্মানি।
২০১৮ বিশ্বকাপ (ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া)
১২ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে ফ্রান্স। সবাইকে অবাক করে তাদের সঙ্গী হয় ক্রোয়েশিয়া। পুরো আসরজুড়ে দারুণ ফুটবল খেলা ক্রোয়াটরা শেষ লড়াইয়ে কুলিয়ে উঠতে পারেনি। হেরে যায় ৪-২ গোলে। ফ্রান্সের হয়ে গোল করেন অঁতোয়ান গ্রিজম্যান, পল পগবা ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। বাকি গোলটি আসে প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী গোল থেকে। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে গোল দুটি করেন ইভান পেরিসিচ ও মারিও মানজুকিচ। ফ্রান্সের জালে বল পাঠানো মানজুকিচ ভুলে নিজেদের জালেও বল জড়িয়ে দেন।