শীতের তীব্রতায় উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম
প্রায় সপ্তাহজুড়ে বয়ে চলা শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গের মরিচের বাজারে। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম ৩০ থেকে এক লাফে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। সোমবার (৯ জানুয়ারি) বগুড়া ও আশপাশের কয়েকটি শহরে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, প্রতি বছর এই সময়ে মরিচের দাম কিছুটা বাড়ে। তবে এবার শৈত্যপ্রবাহের কারণে দাম বেশি বেড়েছে। কৃষি অফিস সূত্রও একই কথা বলছে। তারা জানান, শীতের তীব্রতায় মরিচের দাম বেড়েছে। তবে মরিচ চাষে ঘাটতি নেই।
বগুড়া শহরের পাইকারি রাজাবাজার ও ফতেহআলী বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ খুচরা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের দিন রোববার একই মরিচ বিক্রি হয়েছিল প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরে।
কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ীরা জানান, জেলার নিজস্ব আবাদ ছাড়াও বাইরের জেলাগুলো থেকে বগুড়ায় বড় পরিমাণে মরিচ সরবরাহ হয়। কিন্তু টানা শৈত্যপ্রবাহে এই সরবরাহ ব্যহত হয়েছে।
রাজাবাজারের মরিচ ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন জানান, অল্প কয়েকদিনের মধ্যে জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটফুলবাড়ি, সোনাতলার পাকুল্লা এবং চরপাড়া থেকে দেশি কাঁচা মরিচ বাজারে আসবে। এতে মরিচের দাম কমে আসবে।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ ভিন্ন। বাজারে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা আলমাস কবির বলেন, 'মরিচ কেন সবকিছুর দামই বিক্রেতদের মর্জিমতো ওঠানামা করে। আমাদের পেট আছে তাই খেতে হয়। ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মরিচ রাতারাতি ৬০ টাকা হয়ে যায়, ব্যাপারটা হাস্যকর।'
রাজাবাজার আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, 'উৎপাদনের পালাবদলে মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিনিয়ত আমরা বাজার মনিটরিং করছি। মরিচের সরবারহ আপাতত কম আছে। আশাকরি এক সপ্তাহের মধ্যে দাম কবে আসবে।'
নওগাঁ সদরের ভীমপুর বাজারে সোমবার কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। ভীমপুর গ্রামের কৃষক মোকাব্বর আলী জানান, এখন তো মরিচের মৌসুম নয়। দাম বৃদ্ধি হওয়া স্বাভাবিক। তবে এবার কুয়াশা আর শীতের কারণে দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, জেলায় এবার ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। তবে এই আবাদের পাশাপাশি চাহিদার অন্তত ৫০ শতাংশ কাঁচা মরিচ বাইরের জেলা থেকে আসে।
উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান বলেন, মূলত আবহাওয়ার কারণে কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। শীত তীব্র হওয়ায় অনেক কৃষকই জমি থেকে মরিচ উত্তোলন করেননি।