দুর্বার হৃদয়কে জাতীয় দলে চান রাজিন সালেহ
দুটি যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। প্রথম মিশন মনে রাখার মতো হয়নি, তবে পরেরবার বিজয়ের মালা গলায় ওঠে তৌহিদ হৃদয়ের। দলের সঙ্গে দেশে ফিরে পান বীরোচিত সংবর্ধনা। হৃদয়ের গল্পটা অবশ্য ওই পর্যন্তই। অথচ তার বেশ কয়েকজন সতীর্থের অভিষেক হয়ে গেছে জাতীয় দলের, আশেপাশে আছেন আরও কয়েকজন।
একই দলের সদস্য হলেও বিশেষভাবে কোথাও বিবেচনায় ছিলেন না হৃদয়। অবশেষে বিপিএলে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে আলোচনায় ২২ বছর বয়সী ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে আসা হৃদয়কে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়ার সময় হয়েছে বলে মনে করেন বিপিএলের দলটির প্রধান কোচ রাজিন সালেহ।
পাওয়ার হিটিংয়ে অভাবনীয় উন্নতি করে নিজেকে বদলে ফেলা হৃদয় এবারের বিপিএলের সবচেয়ে বড় বিস্ময়। মাঝে চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার আগে প্রতিটি ম্যাচে সিলেটকে পথ দেখিয়েছেন তিনি, চোখ ধাঁধানো শটে খেলেছেন দুর্বার সব ইনিংস। চোট কাটিয়ে ফিরে ছন্দ পাচ্ছিলেন না, তবে স্বরুপে ফিরতেও দেরি হয়নি। সিলেটের সর্বশেষ ম্যাচে ঝলমলে ইনিংস খেলে আবারও জানান দিয়েছেন নিজের উপস্থিতি।
আঙুলের চোটের কারণে দুটি ম্যাচে খেলা হয়নি হৃদয়ের। বাকি আট ম্যাচের ৭ ইনিংসে ব্যাটিং করে ৪টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৪১.১৪ গড় ও ১৪৯.২২ স্ট্রাইক রেটে ২৮৮ রান তুলেছেন সিলেটের টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যান, যা এখন পর্যন্ত আসরের ষষ্ট সর্বোচ্চ। সাত ইনিংসে ব্যাট করে চারটিতে হাফ সেঞ্চুরি, আর প্রতিটিই 'ইম্প্যাক্টফুল' ইনিংস। তাই তো চার ম্যাচেই তার হাতে ওঠে ম্যাচসেরার পুরস্কার।
সামর্থ্যে বলিয়ান এমন একজন ক্রিকেটারকে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন রাজিন সালেহ। সিলেটের কোচের দায়িত্বে থাকা জাতীয় দলের সাবেক এই ব্যাটসম্যান বৃহস্পতিবার বলেছেন, 'তৌহিদ হৃদয় অবশ্যই ভালো খেলছে। এই টুর্নামেন্টে চারটি ফিফটি করেছে। যেহেতু এখানে ভালো ফর্মে আছে, ভালো টাচে আছে, তাকে নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তা-ভাবনা করা উচিত। আমি অনেক আত্মিশ্বাসী যে, সে বাংলাদেশ দলের হয়ে ভালো খেলতে পারবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।'
২০২০ যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলের চারজন ইতোমধ্যে জাতীয় দলের অংশ হয়ে গেছেন। শরিফুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, শামীম হাসান পাটোয়ারী ও পারভেজ হোসেন ইমনের গায়ে উঠেছে জাতীয় দলের জার্সি। এর মধ্যে শরিফুলের তিন ফরম্যাটেই অভিষেক হয়েছে। টেস্টে বিবেচনা করা হয় জয়কে। বাকি দুজন খেলেছেন টি-টোয়েন্টি।
এ ছাড়া জাতীয় দলের আশেপাশেই আছেন রকিবুল হাসান, আকবর আলী, তানজিদ হাসান তামিম, শাহাদাত হোসেন দিপুরা। এবার তালিকায় যোগ হলো হৃদয়ের নামও, আর সেটা জোরেসোরেই। এবারের বিপিএলের প্রথম চার ম্যাচ দিয়েই আলোচনায় জায়গা করে নেওয়া হৃদয়কে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে বিবেচনা করা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।