আপাতত ‘ভুল’ পদ্ধতিতেই চলবে ঢাকা উত্তরের মশা নিধন
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, মশার উৎপাত থেকে রাজধানীবাসীকে রক্ষা করতে এতোদিন যে পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল তা ভুল। তবে সঠিক পদ্ধতি প্রয়োগে আরও সময় লাগবে। ল্যাব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আপাতত পূর্বের পদ্ধতিতেই চলবে মশা নিধন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মেয়র এসব কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে প্রধান অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, "সঠিক পদ্ধতিতে মশা নিধন পদ্ধতিতে যেতে সময় লাগবে। এখন যদি মশা নিধন পদ্ধতি বন্ধ করে দেওয়া হয়, মশা উৎপাত বাড়বে। তাই আপাতত একই নিয়মে মশা নিধন করা হবে।"
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, "ল্যাব প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের জনবল প্রয়োজন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের ল্যাব প্রতিষ্ঠায় কাজ চলছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ল্যাবগুলো কাজে লাগানো যায় কিনা চিন্তা করা হচ্ছে।"
মেয়র বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডভিত্তিক মশা নিধনে কাজ করতে হবে। এর জন্য জনবল প্রয়োজন। এরপর এলাকা ভিত্তিক মশার ধরন শনাক্ত করে আলাদা আলাদা ওষুধ প্রয়োগ করা হবে।
ল্যাব প্রতিষ্ঠার বিষয় সিটি করপোরেশনের বিধানে আছে জানিয়ে মেয়র বলেন, "এক্সপার্ট বা বিশেষজ্ঞ নিতে হলে সরকারি পদ্ধতিতেই যেতে হবে। যা একটি সময়সাপেক্ষ বিষয়। এছাড়াও এটা (জনবল) স্থায়ী হবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। সফরের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, তাদের সবগুলো ড্রেন ঢেকে রাখা। কিন্তু আমাদের ঢেকে দেওয়া এবং উন্মুক্ত ড্রেন আছে। আমাদের ঢেকে রাখা ড্রেনগুলোতে স্লো রিলিজ ট্যাবলেট ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ তাদের। ফলে লার্ভা জমতে পারবে না। আমরা এ পদ্ধতিতে যেতে পারব বলে বিশ্বাস আছে।"
মেয়র আতিক বলেন, "আধুনিক এসব পদ্ধতি সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে স্থায়ী হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কারণ সিটি করপোরেশনে অফিসাররা থাকেন না। বিসিএস দিয়ে চলে যান। মন্ত্রণালয় নিয়ে যায়। এমন কঠিন বহু বাস্তবতা আছে। আমাদের ১০টি অঞ্চলে অন্তত ১০ জন এন্টোমলজিস্ট লাগবেই। আমাদের নিজস্ব গবেষণাগার লাগবেই। ট্রেনিং দেওয়া লাগবেই।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা ইচ্ছে করে ভুল করছি না। এন্টোমলজিস্টরা যে পদ্ধতি কথা বলছেন, আমরা তাই করছি এতদিন। সবচেয়ে বড় কথা- সচেতনতার বিকল্প নেই। স্কুল পর্যায়েও শিক্ষা দিতে হবে। পাঠ্যপুস্তুকে এসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক পদ্ধতি শিখতে এক্সপার্টদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে (বিদেশিদের সঙ্গে) আমরা কথা বলব। এরইমধ্যে এন্টোমলজিস্টদের নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। আমরা বিদেশ গিয়ে ভুল পদ্ধতি সম্পর্কে বুঝতে পেরেছি।"
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তথ্য মতে, এ অর্থবছরে ক্রয় করা মশা নিধনের কীটনাশক ফেরত দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় আগের কীটনাশকই ব্যবহার করতে হচ্ছে। আপাতত আগের কীটনাশক ও ওষুধ শেষ করতেই সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে।