মুসলিম শিক্ষার্থীকে চড় মারার ঘটনায় বন্ধ করে দেওয়া হলো ভারতের সেই স্কুল
ভারতের উত্তরপ্রদেশের নেহা পাবলিক স্কুলে মুসলিম শিক্ষার্থীকে একে চড় মারতে এক শিক্ষিকার নির্দেশ দেওয়ার ঘটনার পর এবার সেই স্কুলটি সিলগালা করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসি'র।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্কুলটি দেশের 'শিক্ষা বিভাগের মানদণ্ড পূরণ না করায়' এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
স্কুলের শিক্ষার্থীদের কোনো সরকারি স্কুল বা কাছাকাছি অন্যান্য স্কুলে স্থানান্তরিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে এনডিটিভি নিউজ চ্যানেলকে তৃপ্তা ত্যাগী নামক ওই শিক্ষিকা বলেন, তিনি তার ক্রিয়াকলাপের জন্য 'লজ্জিত নন'।
শিশুর বাবা মোহাম্মদ ইরশাদ জানান, পড়া মুখস্ত করতে না পারায় তার ছেলেকে একে একে চড় দিতে বাকি শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষিকা।
মুজাফফরনগর জেলার একটি ছোট বেসরকারি স্কুলে মিসেস ত্যাগী তার ছাত্রদের তাদের সাত বছর বয়সী মুসলিম সহপাঠীকে থাপ্পড় মারার জন্য বলার একটি ভিডিও সপ্তাহান্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল।
ভারতের উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগরের ওই বেসরকারি স্কুলের এ ঘটনার ভিডিও শুক্রবার সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষের মাঝামাঝি চেয়ার-টেবিল পাতা। বসে রয়েছেন শিক্ষিকা। এক পাশে মেঝেতে শিক্ষার্থীরা বসা, অন্য পাশে এক শিশুশিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে। এক এক করে শিশুশিক্ষার্থীরা উঠে আসছে, দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীকে মারছে। এরপর নিজের জায়গায় গিয়ে বসে পড়ছে।
পুরো ঘটনা ঘটছে শিক্ষিকার সামনে, তার তত্ত্বাবধানে।
এসময় শিক্ষিকার অন্য প্রান্তে বসা এক লোকের কণ্ঠ শোনা যায়। যিনি চড় মারাকে উৎসাহিত করছিলেন। শিক্ষিকা এবং সে ব্যক্তিকে ইসলাম বিদ্বেষী কথা বলতে শোনা যায়।
এক পর্যায়ে শিশুটি চড় খেয়ে মুখ ব্যথা হয়ে যাওয়ায় শরীরের অন্য অঙ্গে মারার অনুরোধ করে।
সাত বছর বয়সী সে শিক্ষার্থীর নাম মোহাম্মদ আলতমাশ। তার বাবা-মা জানান, ঘটনাটি বৃহস্পতিবারের।
নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা পুলিশকে ঘটনাটি জানালেও এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দায়ের করেন নি।
ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। বেশ কয়েকজন বলেছেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
রবিবার শিক্ষা কর্মকর্তা শুভম শুক্লা বলেছেন, কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি তদন্ত করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকাকে বলেছেন, স্কুলটিতে কোনো লাইট বা ফ্যান নেই এবং বিভিন্ন ক্লাসের জন্য উপযুক্ত সেকশনও নেই।
তবে, স্কুলটি সিলগালা করার বিষয়ে তৃপ্তি ত্যাগী এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।
এনডিটিভি নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের কাজকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, স্কুলে শিশুদের 'নিয়ন্ত্রণ' করা জরুরি ছিল।