নগরবাসীকে যানজট থেকে স্বস্তি দিতে নির্মিত হচ্ছে ৮ লেনের রায়েরবাজার-কামরাঙ্গীরচর রিং রোড
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন রায়েরবাজার স্লুইস গেট থেকে কামরাঙ্গীরচর লোহার সেতু পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়ককে ৮ লেনের অভ্যন্তরীণ বৃত্তাকার রিং রোডে উন্নীত করার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (২৫ মে) প্রকল্পটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেছেন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পদ্মা সেতু থেকে সাভার, উত্তরা, বিমানবন্দর, গাজীপুর ও উত্তরাঞ্চলের জেলার যানবাহনের আর ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ করতে হবে না। আট লেনের রাস্তা দিয়ে এসব যানবাহন নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারবে বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা।
গত বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত প্রকল্পটি ট্র্যাফিক ডাইভারশনের মাধ্যমে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৯৭৪.৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মোট খরচের ৯০ শতাংশ দেবে সরকার যার মধ্যে ৭৫ শতাংশ ঋণ সহায়তা এবং ২৫ শতাংশ অনুদান হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের বাকি ১০ শতাংশ দেবে সিটি কর্পোরেশন।
সরকারের কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যানজট নিরসনের জন্য রাজধানীর চারপাশে একটি অভ্যন্তরীণ বৃত্তাকার রিং রোড নির্মাণের উদ্দেশ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন 'বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি সরণি' নামে আট লেনের সড়কটি নির্মাণ করবে।
৮ লেনের মধ্যে ৪ লেন হবে এক্সপ্রেসওয়ে এবং বাকি ৪ লেন হবে সার্ভিস রোড। বিদ্যমান ২০ ফুট প্রশস্ততার সড়কটিকে বাড়িয়ে ১৪০ ফুটে উন্নীত করা হবে।
এছাড়া সড়কের প্রতি পাশে ৫ ফুট করে উভয় পাশে মোট ১০ ফুট প্রশস্ততার ১০ কিলোমিটার ফুটপাত ও ১০ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে ৮ কিলোমিটার গার্ড ওয়াল ও রিটেইনিং ওয়াল, ৩টি ওভারপাস, ৩টি ফুটওভারব্রিজ, ৬টি যাত্রী ছাউনি ও বাস বে, ১০ কিলোমিটার ফুটপাত এবং ১০ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণের জন্য ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
প্রকল্পের এসব খরচ বাদে ১৪০ ফুট প্রশস্ততার ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কের নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮৯ কোটি টাকা।
এছাড়া প্রকল্পের ২২ জন পরামর্শক সহ মোট ৩৩ জনেরর জন্য ৩০ মাসে ১৪ কোটি টাকা এবং ৯০০টি এলইডি বাতি স্থাপনে ৭.৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫৬৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ৮টি টাওয়ার স্থানান্তরের জন্য ডিপিডিসিকে ১২০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হবে।
প্রকল্পের পরিচালক ঢাকা দক্ষিণ সিটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো: বোরহান উদ্দিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার পরেই আমরা কাজ শুরু করবো।"
প্রকল্পের অর্থছাড় কিংবা অন্য কোনো বিষয়ে সমস্যা নেই উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন, "প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত ধরা হলেও সার্বিক কাজ বিবেচনায় এক বছর সময় বাড়ানো লাগতে পারে।"
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন জানিয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যানবাহনগুলো সার্ভিস রোড হতে এক্সপ্রেসওয়েতে এবং এক্সপ্রেসওয়ে হতে সার্ভিস রোডে প্রবেশ করতে পারবে। এতে করে সড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকার যানবাহনগুলোও এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের সুবিধা পাবে।
প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে কামরাঙ্গীরচর লোহার ব্রিজ থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত বাকি ৭ কিলোমিটার রাস্তাকে ৮ লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।