দূতাবাসের সত্যায়ন ছাড়া সৌদি গমনেচ্ছুদের ছাড়পত্র দেবে না বিএমইটি
রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সত্যায়ন ছাড়া সৌদি আরব যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যু করা বন্ধ করে দিয়েছে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।
সপ্তাহ দুই আগে, হঠাৎই ছাড়পত্র ইস্যু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৮,০০০ থেকে ১০,০০০ সৌদিপ্রত্যাশী দেশে আটকা পড়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা)।
একক ভিসাধারীদের জন্য সত্যায়নের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সহজ করতে সোমবার (২৪ জুন) প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন বায়রা নেতারা।
বায়রার সভাপতি মো. আবুল বাশার ফোনে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "প্রতিমন্ত্রী অবিলম্বে নিয়মটি শিথিল করার আশ্বাস দিয়েছেন। মন্ত্রণালয় এটি বিএমইটি-কে জানাবে।"
বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের সবচেয়ে বড় গন্তব্য হিসেবে সৌদি আরবের গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে, এটি সমাধানে বিলম্ব হলে আগামী দিনে সম্ভাব্য বেকারত্ব সৃষ্টি হতে পারে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এদিকে, এ সম্পর্কে জানতে সোমবার টিবিএস প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীর কার্যালয়ে গেলেও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
ক্লিয়ারেন্স কার্ড বা বহির্গমন ছাড়পত্র হলো সবশেষ নথি— যা একজন অভিবাসী শ্রমিক দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন।
সৌদি আরবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুই ধরনের ভিসা দেওয়া হয়— একটি হলো একক ভিসা এবং অন্যটি গ্রুপ বা দলগত ভিসা। গ্রুপ ভিসা নিয়ে একগ্রুপে একই কোম্পানিতে ২৫ জনের বেশি কর্মী যেতে পারেন, এক্ষেত্রে তাদের দূতাবাসের সত্যায়নের প্রয়োজন হয়।
যদিও গত কয়েক বছর ধরে একক ভিসাধারীদের জন্য এই নিয়ম শিথিল করা হয়েছিল, তবে গত ১০ জুন থেকে তাদের জন্যেও দূতাবাসের সত্যায়নের একই নিয়ম আবারও চালু করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, আগমনের পর অনেক কর্মীই চাকরি খুঁজে পাচ্ছেন না। এ সমস্যার কারণে একক ভিসাধারীদেরও দূতাবাসের সত্যায়ন নিতে হবে।
সত্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজের অফারগুলোর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হবে। এতে দুর্ভোগ কমবে অভিবাসী শ্রমিকদের।
এক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক টিবিএসকে জানান, তার এজেন্সির প্রায় ৫০ জন কর্মী গত দুই সপ্তাহ ধরে ক্লিয়ারেন্স কার্ড পাচ্ছেন না।
বায়রার যুগ্ম-সচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, "সৌদিগামী প্রায় ৭০ শতাংশ কর্মী একক ভিসা নিয়ে যান। বিএমইটি সৌদিগামী শ্রমিকদের জন্য দৈনিক প্রায় ২,০০০ ক্লিয়ারেন্স কার্ড ইস্যু করতো।"
সৌদি আরবে বর্তমানে আনুমানিক ৩০ লাখ বাংলাদেশী কর্মী নিযুক্ত রয়েছেন। বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের বড় অংশই থাকেন এই দেশটিতে।
এদিকে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সৌদি আরবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮০০ সৌদি রিয়াল থেকে বাড়িয়ে প্রতি মাসে ১,০০০ সৌদি রিয়াল (প্রায় ২৯,০০০ টাকা) করার প্রস্তাব করেছে।
যদিও শ্রম নিয়োগকারীরা জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী ন্যূনতম এই মজুরি ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি।