পর্তুগালের সঙ্গে অবিশ্বাস্য জয়ে জর্জিয়ার ইতিহাস
অবিশ্বাস্য, অভাবনীয়, অচিন্তনীয়- যেই বিশেষণই ব্যবহার করুন না কেন, জর্জিয়ার অর্জনকে ব্যাখ্যা করা যাবে না। ইউরোতে প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পেয়েই শেষ ষোলোতে উঠে গেছে ইউরোপ আর এশিয়ার মধ্যে ব্যবধান হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট্ট দেশটি। আর সেটিও কীভাবে? ইউরোর অন্যতম ফেবারিট পর্তুগালকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে!
পর্তুগাল আগেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোতে ওঠায় এই ম্যাচের গুরুত্ব তাদের কাছে তেমন ছিল না। যে কারণে একাদশে ৮টি পরিবর্তন আনেন কোচ রবার্তো মার্তিনেজ। কিন্তু জর্জিয়ার কাছে এই ম্যাচ ছিল সবকিছু পাওয়ার।
শেষ ষোলোয় যেতে হলে প্রবল শক্তিশালী পর্তুগালকে হারাতেই হবে, এমন সমীকরণ ছিল র্যাঙ্কিংয়ে ৭৬ নাম্বারে থাকা দলটির সামনে। তারাই এবারের ইউরোতে র্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে নিচের দল। প্রায় অসম্ভবকেই সম্ভব করেছে মাত্র ৪০ লাখ জনসংখ্যার দেশটি।
ম্যাচের শুরুতেই চমক, ঘড়ির কাটা দুই মিনিটে পৌঁছাতেই গোল করে বসে জর্জিয়া। পর্তুগালের আন্তোনিও সিলভার ভুল পাস থেকে বল পেয়ে যান মিকাউতাদজে। মাঝমাঠ থেকে সামনে টেনে প্রবল গতিতে ছুটতে থাকা কাভারাতসখেলিয়ার দিকে বল বাড়ান মিকাউ। দারুণ এক ফিনিশে জর্জিয়াকে এগিয়ে দেন নাপোলির নতুন ম্যারাডোনা হিসেবে পরিচিত কাভারাতসখেলিয়া।
ম্যাচে ফিরতে চেষ্টা করতে থাকে পর্তুগাল। একের পর এক আক্রমণে জর্জিয়ার রক্ষণ কাঁপিয়েছেন রোনালদো-ফেলিক্সরা। কিন্তু গোলরক্ষক মামারদাশভিলি হয়ে দাঁড়িয়েছেন চীনের প্রাচীর। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত কয়েকটি সেভে জর্জিয়াকে নিশ্চিত গোল হজম করা থেকে বাঁচিয়েছেন এই ২৩ বছর বয়সী গোলরক্ষক।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জন্য রাতটা ভালো যায়নি। গোলের দেখা তো পাননি-ই, উলটো পেনাল্টির আবেদন করে হলুদ কার্ড দেখেছেন সিআ সেভেন। ইউরোর গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ খেলেও এখন অব্দি গোলশুন্য রোনালদো। এটিও তার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। ইউরোর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড যে তারই।
দ্বিতীয়ার্ধেও পর্তুগাল গোল শোধের চেষ্টা করেছে। আর প্রতি আক্রমণের ওপর নির্ভর করে খেলেছে জর্জিয়া। সেরকম এক আক্রমণ থেকে ৫৭ মিনিটে পেনাল্টি আদায় করে নেয় তারা। আবারও কালপ্রিট সেই আন্তোনিও সিলভা। এবার বক্সের ভেতর বেখেয়ালে লোকোসভিলিকে ফেলে দেন এই ২০ বছর বয়সী ডিফেন্ডার। ভিএআরে দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
সেখান থেকে ব্যবধান বাড়াতে ভুল করেননি মিকাউতাদজে। প্রথম গোলে সহায়তা করার পর জর্জিয়ার জয় নিশ্চিত করা গোলটি করেছেন এই মিডফিল্ডার। নিষ্প্রভ রোনালদোকে ৬৪ মিনিটে তুলে নেন পর্তুগাল কোচ।
কিন্তু বদলি নামা জোটা, রামোসরাও পর্তুগালকে ম্যাচে ফেরাতে পারেননি। শেষ বাঁশি বাজতেই জয়ের উল্লাসে মাতে জর্জিয়ার খেলোয়াড় ও সমর্থকরা। শেষ ষোলোতে স্পেনের মুখোমুখি হবে জর্জিয়া৷