মিলল ১ বিলিয়ন ডলার অনুদান, বিনামূল্যেই পড়তে পারবেন বিখ্যাত মেডিকেল স্কুলের প্রায় সব শিক্ষার্থী
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ তৈরি করে দিতে এগিয়ে আসছেন বিভিন্ন উচ্চবিত্ত অনুদানদাতারা। এবার সে দলে যোগ দিলেন বিলিয়নিয়ার মাইকেল ব্লুমবার্গ। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুল শিক্ষার্থীদের এক বিলিয়ন ডলার উপহার হিসেবে দান করেছেন তিনি।
নিজের অলাভজনক সংগঠন ব্লুমবার্গ ফিলান্ট্রপিজের বার্ষিক প্রতিবেদনে মাইকেল জানান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতের অবনমনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করাই এই অনুদানের মূল উদ্দেশ্য।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় সোমবার জানিয়েছে, উপহারের এই টাকা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বেতন, থাকা-খাওয়ার খরচসহ যাবতীয় ব্যয় বহন করা যাবে, ফলে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যেই তাদের শিক্ষাক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন।
তবে যেসব পরিবারের আয় তিন লাখ ডলারের কম, শুধু তারাই এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আর থাকা খাওয়ার খরচ শুধু তাদেরই বহন করা হবে যাদের পরিবারের আয় ১ লাখ ৭৫ হাজার ডলারেরও কম।
তবে জনস হপকিন্সই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় নয় যারা এরকম মোটা অঙ্কের অনুদান পেয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কের আলবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অব মেডিসিনও তাদের সাবেক শিক্ষক ড. রুথ গোটসম্যানের কাছ থেকে ১ বিলিয়ন ডলার অনুদান পায়, যা সেখানকার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়। ২০১৮ সালে, এনওয়াইইউর স্কুল অফ মেডিসিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ১০টি মেডিকেল স্কুলের মধ্যে প্রথম ছিল যারা তাদের শিক্ষার্থীদের সকল টিউশন ফি মওকুফ করে দেয়।
চিঠিতে জনস হপকিন্সের অ্যালামনাই ব্লুমবার্গ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকে অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের গড় আয়ুর হার এখনও পিছিয়ে রয়েছে। মহামারির কারণে শিক্ষাখাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নিউইউর্ক সিটির সাবেক এ মেয়র বলেন, মেডিকেল স্কুলের উচ্চ বেতনের জন্য অনেক নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তানেরা পড়াশুনা করতে পারেন না। এই সমস্যা উত্তরণের জন্য সকল রাজনৈতিক দলকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
অক্টোবরে অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকান মেডিকেল কলেজের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২৩ সালে স্নাতক শেষ করা ৭০ শতাংশ মেডিকেল শিক্ষার্থীই ঋণগ্রস্ত—যাদের গড় ঋণের পরিমাণ দুই লাখ ডলারেরও বেশি।
মাইকেল বলেন, 'অনেক মেডিকেল শিক্ষার্থীই আর্থিক চাপের কারণে ঝরে পড়ে। আর যারা পাশ করে বের হন তারা ঋণের টাকা পরিশোধ করতে কমিউনিটি এবং প্রান্তিক এলাকায়—যেখানে তাদের বেশি প্রয়োজন, সেখানে কাজ করার পরিবর্তে বেশি বেতন দেয় এমন প্রতিষ্ঠানই বেছে নেন'।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালেও জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের আর্থিক সহায়তায় ১৮০ কোটি ডলার অনুদান দিয়েছিল ব্লুমবার্গ।