বিশ্বের প্রথম মিস এআই মরক্কোর লাইফস্টাইল ইনফ্লুয়েন্সার কেনজা লায়লি
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ইনফ্লুইয়েন্সারদের নিয়ে প্রথম সুন্দরী প্রতিযোগিতা বেশ জমকালোভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এতে মিস এআই হয়েছে মরক্কোর লাইফস্টাইল ইনফ্লুয়েন্সার কেনজা লায়লি।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আয়োজন করা হয় 'মিস এআই' সুন্দরী প্রতিযোগিতা। এআই কনটেন্ট-নির্ভর ওয়েবসাইট ফ্যানভ্যু আয়োজন করে ইভেন্টটি।
প্রচলিত বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতার মতো লায়লি গতানুগতিকভাবে মঞ্চে হেঁটে এসে মুকুট অর্জন করেননি। বরং এআই ব্যবহার করে ভার্চুয়াল মডেলকে নিজের মতো রূপ দিয়েছিলেন অংশগ্রহণকারীরা। এক্ষেত্রে গঠন, পোশাক আর ডিজাইন বিবেচনায় নিয়েই এআই মডেলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর লায়লি প্রতিক্রিয়ায় এআই ক্রিয়েটরদের বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তিতে গুরুত্ব দিয়েছে। ভিডিওবার্তায় লায়লি বলেছে, "এআই প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমার কাজ করার ক্ষেত্রে মিস এআই প্রতিযোগিতায় জয় আরও বেশি অনুপ্রেরণা দেবে।"
লায়লি আরও বলেছে, "এআই নিছক একটি টুলস নয়, এটি শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি রূপান্তরকারী শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। প্রচলিত নিয়মকানুনকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে এবং শূন্য থেকেও সুযোগ তৈরি করতে পারে।"
প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ধাপে গত মাসেই ১০ সেরা ভার্চুয়াল সুন্দরী নির্বাচিত হয়েছিল। সেখানে বাংলাদেশের ভার্চুয়াল সুন্দরী এলিজা খান স্থান পেয়েছিল ।
এলিজা খান নামের এই এআই ইনফ্লুয়েন্সার নতুন প্রজন্মের জন্য ফ্যাশন সচেতন একজন ভার্চুয়াল ব্যক্তিত্ব। এলিজা এমন একটি পৃথিবী তৈরি করতে চায় যেখানে কেউ নিজেকে তুচ্ছ মনে করবে না, সবাইকে সমানভাবে মূল্যায়ন করা হবে; এর মধ্য দিয়ে গড়ে উঠবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুসংহত একটি সমাজ।
প্রায় ১ হাজার ৫০০ প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে প্রথম হয়েছে লায়লি। এ ছাড়া রানার্সআপ হয়েছে ফ্রান্সের লালিনা ভালিনা ও পর্তুগালের অলিভিয়া সি। এর মধ্যে লালিয়ানাকে তৈরি করা হয়েছে সহমর্মিতা, সহিষ্ণুতা ও অন্তর্ভুক্তিকে প্রচারের জন্য। আর অলিভিয়া সি মূলত ডিজিটাল ও মানবিক সহাবস্থানকেই তুলে ধরার চেষ্টা করে।
লায়লি কেন এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, সে বিষয়ে ফিটনেসবিষয়ক ভার্চুয়াল ইনফ্লুয়েন্সার আইতানা লোপেজ বলেন, "লায়লিকে বেছে নেওয়া হয়েছে তার মুখমণ্ডলের সৌষ্ঠবের জন্য। তার হাত, চোখ ও পোশাকের গঠনও নিখুঁত। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে আমদের যে বিষয়টি সবচেয়ে মুগ্ধ করেছে তা হলো তার বক্তিত্ব এবং সে যেভাবে বাস্তব ইস্যুগুলোকে নিয়ে কাজ করে থাকে। সে প্রমাণ করেছে যে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেও সে তার কাজ নিষ্ঠার সঙ্গেই করছে।"
লায়লি হিজাব পরিহিত অ্যাকটিভিস্ট ও ইনফ্লুয়েন্সার। ইনস্টাগ্রামে তার ফলোয়ারের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। টিকটকেও রয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার ফলোয়ার।
লায়লি মরক্কোর প্রথম ভার্চ্যুয়াল ইনফ্লুয়েন্সার। নিজের কনটেন্টের মাধ্যমে তিনি দেশের ঐতিহ্যকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে চান।
লায়লিকে তৈরি করেছেন ক্যাসাব্লাঙ্কার ৪০ বছর বয়সী মরিয়ম বেসা। যিনি প্রথমবারের মতো এই ধরনের প্রতিযোগিতা জিতে রোমাঞ্চিত হয়েছেন। তিনি বলেন, "আমি গর্বের সাথে বলতে পারি মরক্কোর প্রতিনিধিত্ব করার এটি একটি দারুণ সুযোগ।"
এআই দিয়ে বিভিন্ন একটি অ্যাভাটার তৈরি করে থাকে প্রযুক্তি কোম্পানি। কৃত্রিম মডেলগুলো ছবি দেখতে একদম বাস্তব বলে মনে হয়। এদের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থাকে।
এআই ইনফ্লুয়েন্সারদের একেকজনের একেক বৈশিষ্ট্য থাকে। বিভিন্ন কাল্পনিক প্রেক্ষাপট জুড়ে দিয়ে তাদের ছবি অ্যাকাউন্টগুলোতে নিয়মিতভাবে পোস্ট করা হয়। এসব অ্যাকাউন্টের হাজার হাজার ফলোয়ার রয়েছে। বিশেষ করে ইনস্টাগ্রামে এই ধরনের ইনফ্লুয়েন্সাররা জনপ্রিয়। এমনই এআই ইনফ্লুয়েন্সাদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান