যে প্রক্রিয়ায় বিসিবি সভাপতি হলেন ফারুক আহমেদ
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হচ্ছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ, এটা এক প্রকার নিশ্চিতই ছিল। বুধবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে বিসিবির জরুরি সভা শেষে তা নিশ্চিত হয়ে গেল। তিন দফায় দায়িত্ব পালন করা নাজমুল হাসান পাপন পদত্যাগ করেছেন। বিসিবির মসনদে বসানো হয়েছে ফারুককে, বুধবার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে বিসিবি।
ফারুককে বিসিবি সভাপতির পদে বসাতে পথ তৈরি করতে হয়েছে, কারণ সরাসরি তাকে সভাপতি নির্বাচিত করার উপায় ছিল না। সরাসরি সভাপতি করলে সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হতো বাংলাদেশকে। সাবেক এই ক্রিকেটার জেলা ক্রীড়া সংস্থা বা ক্লাবের কাউন্সিলর নন। এ অবস্থায় কোনোভাবেই তাকে বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত করা সম্ভব ছিল না। বিসিবির সংবিধান অনুযায়ী তাকে আগে কাউন্সিলর হতে হয়েছে, সেই ক্ষমতা বলে বিসিবি পরিচালক হন তিনি। এরপর বিসিবির পরিচালকদের ভোটে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
বিসিবির সংবিধান অনুযায়ী দুজন পরিচালক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনীত থাকেন। অর্থাৎ, এনএসসির কাউন্সিলরশিপ নিয়ে বিসিবি পরিচালক হন দুজন। এই বোর্ডে এনএসসির দুজন মনোনীত ছিলেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস ও টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি। ফারুকসহ আরেকজনকে বোর্ডে যুক্ত করতে এ দুজনকে পদত্যাগের নির্দেশনা দেন এনএসসির সচিব আমিনুল ইসলাম।
জালাল ইউনুস পদত্যাগ করলেও রাজি ছিলেন না ববি। এনএসসিকেই পদক্ষেপ নিতে বলেন তিনি। আজ তার কাউন্সিলরশিপ বাতিল করা হয়। এ দুজনের জায়গায় বিসিবি পরিচালক করা হয় ফারুক ও প্রবীণ কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে। শুরুতে বিসিবি সভাপতির পদে নাজমুল আবেদীনের নামও শোনা গেছে। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ফারুকের বিসিবি সভাপতি হওয়াটা নিশ্চিত হয়ে ওঠে।
৫৮ বছর বয়সী ফারুক বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে ১১ বছর খেলেছেন। সময়কালটা দীর্ঘ হলেও এই সময়ে খুব বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি তার। তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় আইসিসির সহযোগী দেশও ছিল না বাংলাদেশ। সে সময় বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ হতো না বাংলাদেশের। বাংলাদেশ আইসিসির সহযোগী সদস্য হয় ১৯৯৭ সালে, ফারুক ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ৭টি ওয়ানডে খেলেন। ২০০১ সাল পর্যন্ত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন সাবেক ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানার কয়েক বছরের মধ্যেই বিসিবিতে যুক্ত হন ফারুক। দুই মেয়াদে বিসিবির প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০০৩ সালে নির্বাচক প্যানেলের প্রধান করা হয় ফারুককে, দায়িত্ব পালন করেন ২০০৭ সাল পর্যন্ত। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে আবারও একই দায়িত্ব পান তিনি, স্থলাভিষিক্ত হন আকরাম খানের। এ দফায় তিনি দায়িত্ব সামলান ২০১৬ সাল পর্যন্ত। এবার সরকারের পালাবদলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে আসীন হলেন ফারুক।