হোয়াইটওয়াশ হয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন পাকিস্তানি সাবেকরা
ঘরের মাঠে খেলা, শক্তি-অভিজ্ঞতাতেও প্রতিপক্ষের চেয়ে এগিয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানকেই ফেবারিট ধরা হয়েছিল। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। দুই ম্যাচেই দাপট দেখানো বাংলাদেশ সিরিজ জেতাসহ পাকিস্তানকে দিয়েছে হোয়াইটওয়াশের তেতো স্বাদ।
এমন ফল মেনে নিতে পারছেন না পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা। দেশটির দুই কিংবদন্তি জাভেদ মিয়াঁদাদ ও ইনজামাম-উল-হক তো রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন। হতশ্রী ফলের দায় হিসেবে ব্যাটসম্যানদের কাঠগড়ায় তুলেছেন তারা। পাশাপাশি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কঠোর সমালোচনা করেছেন সাবেক এই দুই অধিনায়ক ব্যাটসম্যান।
এই সিরিজের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা ১৩ টেস্টের ১২টিতেই হারে বাংলাদেশ, একটি ম্যাচ ড্র হয়। এবার পাকিস্তানের মাটিতেই দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জেতে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে, যা তাদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম। পরের টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়েও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখে বাংলাদেশ তুলে নেয় ৬ উইকেটের জয়।
দুই টেস্টের এক ইনিংস বাদে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের বেহাল দশা দেখা যায়। প্রথম টেস্টের ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানেই অলআউট হয় তারা। ৩০ রানের সহজন লক্ষ্য বিনা উইকেটেই পাড়ি দেয় বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো দেশের মাটিতে ১০ উইকেটে হারে পাকিস্তান।
দ্বিতীয় টেস্টের শুরু থেকেই বাংলাদেশ দাপট দেখা যায়, প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান ২৭৪ রান তোলে। জবাবে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পরও লিটন কুমার দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ করে ২৬২ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান ১৭২ রানে গুটিয়ে গেলে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮৫। ৪ উইকেটে এই রান পাড়ি দেয় নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
দুই টেস্টেই পাকিস্তানের অসহায় আত্মসর্পণ দেখা যায়, ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হারের পাশাপাশি পড়তে হয় হোয়াইটওয়াশ হওয়ার অস্বস্তিতে। ঘরের মাঠে এমন অভিজ্ঞতা যে পাকিস্তানের বেশি নেই। এ নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার টেস্টে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হলো তারা। দলের এমন দশা দেখে যারপরনাই হতাশ মিয়াঁদাদ।
ব্যাটসম্যান ও পিসিবির সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'আমাদের ক্রিকেট এই পর্যায়ে এসেছে, এটা কষ্টের। গোছানো পারফরম্যান্স করেছে বাংলাদেশ, এ জন্য তাদেরকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। কিন্তু এই সিরিজে আমাদের ব্যাটিং যেভাবে ভেঙে পড়েছে, তা খুব খারাপ লক্ষ্মণ। আমি শুধু ক্রিকেটারদের দোষ দেব না। কারণ গত দেড় বছরে বোর্ডে অনেক কিছু হয়েছে। অধিনায়কত্ব ও ম্যানেজমেন্টের পরিবর্তন দলকে প্রভাবিত করেছে।'
ইনজমাম অবশ্য কেবল ব্যাটসম্যানদেরই দায় দেখছেন। তার ভাষায়, 'বিগত সময়ে সেরা দলগুলোকে হারানোর জন্য ঘরের মাঠের সিরিজকে সব সময় আমাদের সেরা সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এর জন্য তো ব্যাটসম্যানদের রান পেতে হবে। আমাদের ব্যাটসম্যানরা অতীতে রান পেয়েছে, কিন্তু এই মুহূর্তে আমি মনে করি, এই সংকট কাটিয়ে উঠতে তাদের মানসিক দৃঢ়তা দরকার।'