শিক্ষার্থীদের বাক স্বাধীনতায় তলানিতে হার্ভার্ড, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্বের নামকরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বাক স্বাধীনতার পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিশ্লেষণ তুলে ধরেছে ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিভিজুয়াল রাইটস অ্যান্ড এক্সপ্রেশন (এফআইআরই) ও কলেজ পালস। এতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের বাক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড এবং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।
গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধের জেরে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের প্রতি ভূমিকার জন্য এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কড়া সমালোচনার শিকার হয়।
এমনকি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারেরও দাবি জানিয়েছিল।
বাক স্বাধীনতার রক্ষার ক্ষেত্রে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো ২৫১টি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এর পরেই রয়েছে কলাম্বিয়া ও নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়।
এছাড়াও ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া, বার্নার্ড কলেজ, সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় বাক স্বাধীনতার অবস্থাকে 'নাজুক' হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
অন্যদিকে ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া, মিশিগান টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি ও ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটিতে বাকস্বাধীনতার অবস্থা 'ভালো' হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এফআইআরই- এর প্রেসিডেন্ট গ্রেগ লুকিয়ানফ এক্সিওসকে বলেন, ক্যাম্পাসগুলোতে বছরের পর বছর ধরে বাক স্বাধীনতা হ্রাস পেয়েছে। তবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যু ব্যাপকভাবে মানুষের মনোযোগ কেড়েছে।
২৫০টিরও বেশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৮ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ পরিচালনা করে এমনটাই বিশ্লেষণে তুলে ধরা হয়।
এর মধ্যে ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বাক স্বাধীনতা রক্ষার প্রচেষ্টা 'সামান্য' স্পষ্ট।
২৪ শতাংশ বলেছেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটি 'মোটেই করে না' বা করলেও তা 'যৎসামান্য'।
৩৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর ভাষ্য- ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় পুলিশ যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তাতে শিক্ষার্থীদের নিজেদের ক্যাম্পাসে নিজেদেরই 'খুব' কিংবা 'কিছুটা' অনিরাপদ মনে হতে শুরু হয়েছে।
৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর বলছে, তারা ক্যাম্পাসে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে জটিলতা বোধ করেন।
৫২ শতাংশ জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসের কর্মসূচিতে অন্য শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ার বিষয়টি 'কদাচিৎ' গ্রহণযোগ্য। গত বছর একই কথা জানিয়েছিলেন ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। এরও আগের বছর ৩৭ শতাংশ শিক্ষার্থী এমনটা জানিয়েছিলেন।
৩২ শতাংশ শিক্ষার্থীর মতে, সহিংসতার মাধ্যমে ক্যাম্পাসে আন্দোলন দমনের বিষয়টি 'কদাচিৎ' গ্রহণযোগ্য। গত বছর ২৭ শতাংশ এবং তার আগের বছর ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী এমনটি জানিয়েছিলেন।
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক