পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিমকে খুনের দায়ে সহকারীর ৪০ বছরের কারাদণ্ড
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহকে হত্যার দায়ে তার সহকারী টাইরেস ডেভন হাসপিলকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালে ফাহিমের কাছ থেকে প্রায় ৪ লাখ ডলার চুরির পর তাকে হত্যা করে মরদেহ খণ্ডবিখণ্ড করেন টাইরেস।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ম্যানহাটনের ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি আলভিন ব্র্যাগ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ফাহিম সালেহকে নির্মমভাবে হত্যা করার জন্য আজ (১১ সেপ্টেম্বর) শাস্তির মুখোমুখি হচ্ছেন টাইরেস হাসপিল।
অ্যাটর্নি বলেন, 'এই শাস্তি মি. সালেহকে ফিরিয়ে দেবে না, কিন্তু আমি আশা করি তার শোকাহত পরিবার একটি পরিসমাপ্তি পাবে।'
চলতি বছরের জুনে টাইরেস হত্যা, বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরিসহ ২০২০ সালে ফাহিম সালেহর মৃত্যু-সংক্রান্ত অন্যান্য অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন।
প্রসিকিউটররা জানান, নাইজেরিয়ায় রাইডভিত্তিক স্টার্টআপের মতো বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফাহিম। টাইরেস প্রথমে তার সহকারী হিসেবে নিয়োগ পান। কিন্তু তিনি নিয়োগ পাওয়ার কিছুদিন পরই ফাহিমের ব্যবসা থেকে অর্থ আত্মসাৎ করতে শুরু করেন।
নিয়োগ পাওয়ার এক বছর পর টাইরেস পদত্যাগ করেন। কিন্তু ফাহিম তার চুরি ধরে ফেলে তাকে দুই বছরের মধ্যে অর্থ পরিশোধের সুযোগ দেওয়ার পরও তিনি চুরি চালিয়ে গিয়েছিলেন।
প্রসিকিউটররা জানান, সাবেক নিয়োগডারা তার এই চুরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়ে দিতে পারেন—এ আশঙ্কায় ফাহিমকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন টাইরেস।
২০২০ সালের ১৩ জুলাই কালো স্যুট ও মাস্ক পরে ফাহিমের সঙ্গে তার ম্যানহাটনের অ্যাপার্টমেন্টের এলিভেটরে ওঠেন টাইরেস। এলিভেটর ফাহিমের ফ্লোরে পৌঁছার পর টাইরেস তার ঘাড়ে অতর্কিতে টেজার দিয়ে শক দেন।
ফাহিম মেঝেতে পড়ে গেলে টাইরেস তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
এর পরদিন নিজ ফ্ল্যাটে ফাহিমের বিকৃত খণ্ডিত মরদেহ পাওয়া যায়।
ওই সময়ের খবরে বলা হয়েছিল, গোয়েন্দারা ফাহিমের মৃতদেহের পাশে একটি বৈদ্যুতিক করাত পেয়েছিলেন। পুলিশের আরেকজন মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, পরে অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ফাহিমের মাথা ও শরীরের অন্যান্য অংশ উদ্ধার করা হয়।
ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্টে বেশ কয়েকটি বড় প্লাস্টিক ব্যাগও পাওয়া যায়। খুনের আলামত নিশ্চিহ্ন করার জন্য খুনি এই প্লাস্টিক ব্যাগগুলো সঙ্গে করে এনেছিল বলে ধারণা করেছিল পুলিশ।
নাইজেরিয়ার মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং স্টার্টআপ গোকাদার সহপ্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন ফাহিম। কৈশোরে তিনি নিজের প্রথম কোম্পানি খোলেন।
ফাহিম অল্প বয়সেই কোডিংয়ের মাধ্যমে অ্যাপ বানানো শুরু করেন। তার স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনা ওয়াল্টহ্যামের বেন্টলি ইউনিভার্সিটিতে।
কলম্বিয়া ও বাংলাদেশেও রাইড শেয়ারিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফাহিম।