প্রথম একনেক সভায় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা স্থগিত করল অন্তবর্তী সরকার
অন্তর্বর্তী সরকার বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঘোষণা করেছে যে, অর্থনৈতিক কৌশল পরিবর্তনের অংশ হিসেবে দেশের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সাময়িকভাবে স্থগিত করবে তারা।
গত ৮ আগস্ট শপথ নেওয়া সরকারের অধীনে গঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) প্রথম কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত রাখছি। এই মুহূর্তে এটি আমাদের ফোকাস নয়।'
ড. ওয়াহিউদ্দিন বলেন, দেশের অর্থনীতি ও অর্থায়নের নতুন দিকনির্দেশনা খুঁজতে একটি সরকারি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'তিন মাসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দেবেন।'
তিনি আরও বলেন, তবে টাস্কফোর্সের অনুসন্ধানের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করবে না সরকার। 'আমাদের এর জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই। আমরা দ্রুত গতিতে নতুন প্রকল্প প্রণয়ন করছি।'
উপদেষ্টা বলেন, দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবকাঠামোগত উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মতো মানবসম্পদ বিভাগে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। 'আমাদের এসব ক্ষেত্রে দ্রুত নতুন উদ্যোগ নিতে হবে।'
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা স্থগিতের বিষয়টি বড় কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত কি না জানতে চাইলে ড. ওয়াহিদউদ্দিন নেতিবাচক জবাব দেন।
তিনি বলেন, 'এই পরিকল্পনার সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রণীত জাতীয় বাজেটের কোনো মিল নেই।'
নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি বলেন, পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার তাদের পছন্দ অনুযায়ী পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। 'সম্ভবত বাংলাদেশকে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ বা উন্নত দেশে পরিণত করতে... আমরা বড় কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেব না। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা একটি রাজনৈতিক দলিল যা রাজনৈতিক নির্দেশনা ও দর্শনকে অন্তর্ভুক্ত করে।'
২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে অনুমোদিত হয়। এটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উত্তরসূরি এবং দীর্ঘমেয়াদি 'বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১' এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রথম বড় দলিল।