ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও সিইওর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা
বিতর্কিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও সিইও মোহাম্মদ রাসেলের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় অর্থ আত্মসাতের মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির একজন গ্রাহক বৃহস্পতিবার ভোরে গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
বাদী নিজেই দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে খবরটি নিশ্চিত করে বলেন, "গুলশান পুলিশ গতকাল রাতে মামলাটি নথিভুক্ত করেনি, সকালে আমরা আবার থানায় এলে তারা আমাদের জানায় যে, মামলাটি ফাইল করা হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "এখন আদালতের আদেশের অপেক্ষা করছি"।
মামলার স্টেটমেন্ট অনুসারে, আরিফ গত ২৯ মে ৩.১০ লাখ টাকার ওপরে পণ্য অর্ডার দেন। কিন্তু পণ্য ডেলিভারির প্রতিশ্রুত সময়সীমা শেষ হওয়ার পরেও আরিফ তার পণ্য বুঝে পাননি।
পরে ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে যখন তিনি ও তার বন্ধুরা বকেয়া পণ্য এবং রিফান্ড সম্পর্কে খোঁজ নিতে যান, তখন ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং অন্যান্যরা তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন; এমনকি তারা মৃত্যুর হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেছেন আরিফ। ইভ্যালির চেয়ারম্যান তাদের কাছে পণ্য সরবরাহ করতে অস্বীকার করেছেন বলেও মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে।
তবে আজ একটি ফেসবুক পোস্টে মোহাম্মদ রাসেল দাবি করেছেন যে তিনি ৯ সেপ্টেম্বর অফিসেই যান নি।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর আইনভঙ্গের কারণে ইভ্যালির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান সেদিন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইভ্যালি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ভোক্তা অধিকার আইন ও দণ্ডবিধি আইন লঙ্ঘন করেছে।
এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে দুটি ভিন্ন প্রতিবেদনে ইভ্যালি জানায় যে, ইভ্যালির কাছে গ্রাহকদের পাওনার পরিমাণ ৩১১ কোটি টাকা এবং মার্চেন্টদের পাওনার পরিমাণ ২০৬ কোটি টাকা।
এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইভ্যালি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট নথি চেয়ে বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিপুল ডিসকাউন্টের লোভ দেখিয়ে ৭ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারির প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ইভ্যালি অগ্রিম টাকা নিলেও তাদের পণ্য সরবরাহ করেনি। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করা অনেক গ্রাহক এখনও পণ্য পাননি। ইভ্যালি যেসব গ্রাহকদের রিফান্ড চেক দিয়েছে, ব্যাংক একাউন্টে টাকা না থাকায় সেগুলোও বাউন্স হচ্ছে।
এছাড়াও জালিয়াতি বা আত্মসাতের তদন্ত চলমান থাকায় ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং তার স্বামী ও কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।