নৌপথে ভারতে খাদ্যপণ্যের চালান পাঠাচ্ছে প্রাণ
নৌপথ ব্যবহার করে ভারতে খাদ্যপণ্যের রপ্তানি শুরু করছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। পণ্য বোঝাই জাহাজটি নরসিংদীর শীতলক্ষ্যা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনার শেখবাড়িয়া দিয়ে ভারতের কলকাতা বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ৭১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পণ্য পৌঁছাতে সময় লাগবে ৮দিন। এই চালানে ২৫ হাজার কার্টন লিচি ড্রিংক রপ্তানি করা হচ্ছে।
প্রাণের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নৌ-প্রটোকল চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ থেকে খাদ্যপণ্যের এটিই প্রথম রপ্তানি। যার মাধ্যমে সড়কপথের চেয়ে ৩০ শতাংশ রপ্তানি ব্যয় কমবে।
এর আগে স্থলপথে ১৯৯৭ সালে চানাচুর রপ্তানির মধ্য দিয়ে ভারতের ত্রিপুরায় প্রাণ গ্রুপ রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে ২৮টি রাজ্যে প্রতিষ্ঠানটির দেড় শতাধিক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, বিহার, ত্রিপুরা, গুজরাট, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কেরালা।
প্রাণের রপ্তানিকরা পণ্যের মধ্যে রয়েছে ফ্রুট ড্রিংকস, চিপস, স্ন্যাকস, বিস্কুট, ক্যান্ডি, সস, কেচাপ, নুডলস্, জেলি এবং মশলা।
বর্তমানে ভোমরা, বুড়িমারী, সুতারকান্দি, আখাউড়া, ডাউকি স্থলবন্দর এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের মধ্যে মাধ্যমে প্রাণ তাদের পণ্য ভারতে রপ্তানি করে।
প্রাণের তথ্যমতে, গত তিন বছরে ভারতে মোট ২২৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তীতে প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক থেকে পণ্যবাহী জাহাজটি ভারতের উদ্যেশ্যে যাত্রা শুরু করবে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপনন) কামরুজ্জামান কামাল বলেন, 'সড়ক পথের চেয়ে নৌপথে পণ্য পরিবহন খরচ কম। সড়ক পথে অনেক জায়গায় রাস্তা খারাপ হওয়ায় পণ্য নষ্ট কিংবা পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিন্তু নৌপথ এক্ষেত্রে নিরাপদ।'
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের সেভেন সিস্টারস অঞ্চলে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সে বিষয়টি মাথায় রেখে প্রাণ প্রতিনিয়ত দেশটির মানুষের চাহিদা উপযোগী পণ্য সরবরাহের চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং দু'দেশের মধ্যে থাকা কিছু প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠে রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রাণের তথ্য বলছে, প্রতিবছর ভারতে প্রাণ এর রপ্তানি গড়ে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এছাড়া বিশ্বে প্রাণ এর খাদ্যপণ্যের মোট রপ্তানির প্রায় ৩০ শতাংশ হয় ভারতে।
উল্লেখ্য, নৌ-প্রটোকল রুটে ২০১৮-১৯ সালে বাংলাদেশি জাহাজের মাধ্যমে ২ হাজার ৬৮৫টি ট্রিপে ২২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫২ মেট্রিক টন মালামাল পরিবাহিত হয়েছে। একই সময়ে ভারতীয় জাহাজের মাধ্যমে ৫৯টি ট্রিপে পরিবাহিত হয়েছে ৭৮ হাজার ৭৯৪ মেট্রিক টন মালামাল।
গত মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশি জাহাজে ২ হাজার ৫৯১টি ট্রিপের মাধ্যমে ২২ লাখ ২৩ হাজার ৪৬১ মেট্রিক টন এবং ভারতীয় জাহাজে ৫৪টি ট্রিপের মাধ্যমে ৮৮ হাজার ৫৬৬ মেট্রিক টন মালামাল পরিবাহিত হয়েছে।