বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর থেকে প্রথমবারের মতো বড় আকারে পণ্য রপ্তানি
মীরসরাইয়ের বেপজা ইকোনমিক জোনের কারখানা খাইশি লিনজেরি প্রথমবারের মতো স্পেনে ১২ মিলিয়ন ইউএস ডলারের তৈরি পোষাক পণ্য রপ্তানি করছে। ১ লাখ ৮০ পিস তৈরি পোশাকের (অন্তর্বাস) চালানটি গতকাল (১৩ জুন) কারখানা থেকে কনটেইনার ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে স্পেনে এই রপ্তানি পণ্যের চালানটির শিপমেন্ট হবে বলে জানিয়েছে খাইশি লিনজেরি কর্তৃপক্ষ। মিরসরাই উপজেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে অবস্থিত চীনের এই প্রতিষ্ঠানটি বেজপা ইকোনমিক জোনে ৬০.৮৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে তিনটি কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল। ১ লাখ স্কয়ার ফিটের প্রথম ইউনিটে চলতি বছরের শুরুতে এটির উৎপাদন শুরু হয়।
কোম্পানিটির হিউমেন রিসোর্স অফিসার জামান উল্লাহ টিবিএসকে বলেন, "১৩ জুন কারখানা থেকে আমাদের প্রথম রপ্তানি চালান ডেলিভারি দেওয়া হয়েছে। স্পেনের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানটির ১৩ কোটি ৬০ লাখ পিসের অন্তর্বাস এর অর্ডার রয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি অর্ডারগুলো সরবরাহ করবো।"
তিনি বলেন, "আমাদের কারখানায় চার হাজার শ্রমিক কাজ করতে পারে। কিন্তু শিল্পনগরে শ্রমিকদের আবাসন সুবিধা এখনো নিশ্চিত না হওয়ায় এখানে শ্রমিক পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত ১ হাজার শ্রমিক নিয়োগ দিতে পেরেছি। অর্থাৎ সক্ষমতার আমরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎপাদন করতে পারছি।"
খাইশি লিনজেরি কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, প্রতিটি ১ লাখ স্কয়ার ফিট আয়তনের আরো দুটি ইউনিট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি মাস থেকেই সেগুলোর নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কথা। তবে শ্রমিক ও অন্যান্য সংকটের কারণে আপাতত কারখানা স্থাপনের কাজ স্থগিত রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বেপজার তথ্য অনুযায়ী, খাইশি লিনজেরি ছাড়াও চীনের বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠান ফেংকুন কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল কোম্পানি (বিডি) লিমিটেড, কেপিএসটি শুজ (বিডি) কোম্পানি লিমিটেড উৎপাদনে রয়েছে।
বেপজা ইকোনমিক জোনের পরিচালক (ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড কমার্শিয়াল) শিবু রঞ্জন দাস বলেন, "গত নভেম্বর থেকে বেপজা ইকোনমিক জোনের কারখানাগুলোতে রপ্তানি শুরু হয়। এ পর্যন্ত বেপজা ইকোনমিক জোনের কারখানাগুলো থেকে ১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।"
বেপজা ইকোনমিক জোন সম্পূর্ণরূপে চালু হলে প্রায় ২.৭০ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। মোট ১,১৩৮.৫৫ একর জমিতে ৫৩৯টি শিল্পপ্লট নিয়ে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বেপজা কর্মকর্তারা জানান, অর্থনৈতিক অঞ্চলটির মধ্যে শিল্প প্লট বরাদ্দের জন্য ১০০টিরও বেশি কোম্পানি আবেদন করেছে। এখন পর্যন্ত ২৩টি কোম্পানিকে প্লট দেওয়া হয়েছে। বাকি আবেদনগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
এই কোম্পানিগুলো জুতার আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র, প্যাকেজিং উপকরণ, ফিনিশড লুব্রিকেন্ট, ক্যাম্পিং সরঞ্জাম, আউটডোর প্রোডাক্ট, কাজুবাদাম প্রক্রিয়াকরণ, তাঁবু, পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।