সেনেগালের বিপক্ষে ঘাম ঝরানো জয় নেদারল্যান্ডসের
৮ বছর পর আবারও বিশ্বকাপ রাঙালো কমলা রঙে। সেনেগালকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে শুভ সূচনা করেছে নেদারল্যান্ডস। ২০১০ বিশ্বকাপের রানার্স-আপ আর ২০১৪ বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়া ডাচরা খেলারই সুযোগ পায়নি ২০১৮'র রাশিয়া বিশ্বকাপ। কাতার বিশ্বকাপে ফিরেই নিজেদের চেনা ছন্দ খুঁজে পেয়েছে লুই ফন গালের কমলাবাহিনী।
গ্রুপ 'এ'র ফেভারিট দুই দল ছিল নেদারল্যান্ডস এবং সেনেগাল। গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হয় দুই দল। সেখানে কাতারের আল থুমামা স্টেডিয়ামে সেনেগালকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ডাচরা।
তবে স্কোরলাইনের মতো নেদারল্যান্ডসের জন্য এত সহজ ছিল না ম্যাচ জেতা। সেনেগালও খেলেছে সমান তালেই। ফিফা র্যাংকিংয়ে দুই দলের ব্যবধান ১০ ধাপের। তবে ম্যাচে সেটি বোঝার কোনো উপায়ই ছিল না। ৮ নম্বর দল নেদারল্যান্ডসকে বরং হাড়খাটনিই খাটিয়েছে আলিউ সিসের সেনেগাল।
খেলার প্রথমার্ধে সাদিও মানেকে ছাড়া দুর্বল হয়ে পড়া আক্রমণভাগ নিয়েও নেদারল্যান্ডসের ডি-বক্সে মূহুর্মূহু আক্রমণ চালায় সেনেগাল। সেনেগালের আক্রমণ সামলে মাঝেমাঝেই আক্রমণে উঠছিল নেদারল্যান্ডসও। তবে দুদলের কেউই গোলের পরিস্কার কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। যদিও প্রথমার্ধে সেনেগালের গোল পাওয়ার সম্ভাবনাই ছিল বেশি।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে অনেকটাই গুছিয়ে নেয় ডাচরা। প্রথমার্ধের মতোই আক্রমণ পালটা আক্রমণের মধ্যে দিয়ে চলতে থাকে ম্যাচ। তবে গোলের দেখা পাচ্ছিল না কেউই। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ফ্রেংকি ডি জংয়ের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে ডাচদের এগিয়ে দেন কোডি গাকপো। বিশ্বকাপে এটি গাকপোর প্রথম ম্যাচ ছিল, আর সেই অভিষেকেই বাজিমাত করেন এই তরুণ ডাচ উইংগার।
তবে গোলটি হজমের ক্ষেত্রে সেনেগাল গোলকিপার এদুয়ার্দ মেন্ডিরও অবদান রয়েছে। নিজের লাইন ছেড়ে পাঞ্চ করতে এসে বল মিস করেন মেন্ডি, আর মেন্ডির হাত বলে লাগার আগেই সেটিতে মাথা ঠেকিয়ে বল ফাঁকা পোস্টে পাঠিয়ে দেন গাকপো। এরপর সেনেগাল আক্রমণ করলেও দুর্দান্ত সেভে তাদের গোলবঞ্চিত করেন নেদারল্যান্ডসের গোলকিপার নপার্ট।
ম্যাচের একেবারেই শেষ মুহূর্তে গোল শোধের জন্য মরিয়া সেনেগালের রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল করেন ডেভি ক্লাসেন। এরপরই শেষ বাঁশি বাজান রেফারি।
ম্যাচ হারলেও ৯০ মিনিট নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে সমানে সমানে লড়াই করেছে সেনেগাল। বল দখলে ডাচদের আধিপত্য থাকলেও শটের ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল সেনেগাল। ডাচদের কাছে বলের দখল ছিল ৫৪%, সেনেগালের ১৫ শটের বিপরীতে ডাচদের শট ছিল ১০ টি।
এই জয়ের মাধ্যমে ইকুয়েডরের সঙ্গে যৌথভাবে 'এ' গ্রুপের শীর্ষে এখন নেদারল্যান্ডস। আর হারের সাথে সাথে স্বাগতিক কাতারের সঙ্গে গ্রুপের তলানির দল সেনেগাল। নিজেদের পরবর্তী ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের প্রতিপক্ষ ইকুয়েডর, সেনেগাল খেলবে স্বাগতিক কাতারের বিপক্ষে।