করোনা আক্রান্ত শিশুরাও খেতে পারবে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল
সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পৌনে ৫ লাখ শিশুকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অসুস্থ শিশুরা ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খেতে না পারলেও করোনা আক্রান্ত শিশুদের খেতে নিষেধ নেই।
এদিকে, অতীতে এ-প্লাস ক্যাম্পেইনে কক্সবাজারে ৯৯ শতাংশ সফলতা পাওয়া গেছে বলে যানা যায়। আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবারও একইভাবে সফল হওয়ার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় ভিটামিন 'এ' প্লাস ক্যাম্পেইন সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ আয়োজিত সাংবাদিক অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় আরও জানানো হয়, কক্সবাজারে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫৩ শিশুকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ৪ থেকে ১৭ অক্টোবর, পক্ষকালব্যাপী জাতীয় ভিটামিন-এ প্ল্যাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে জেলার ৮ উপজেলা ও ১টি পৌরসভায় এক হাজার ৯৫১ টিকা কেন্দ্রে শিশুদের টিকা খাওয়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নে জেলায় ২০৮ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ১৭৩ জন পরিবার কল্যাণ সহকারী এবং ৫ হাজার ৪০৭ জন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। পুরো ক্যাম্পেইন তত্ত্বাবধান করবেন ২১৬ জন কর্মকর্তা।
সভায় আরও বলা হয়, কক্সবাজারে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৬২ হাজার ৪২৮ শিশুকে নীল রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৪ লাখ ১৬ হাজার ৯২৫ শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ৯টি স্থায়ী এবং ১ হাজার ৮৪০টি অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এছাড়া ভ্রম্যমাণ টিকাদান কেন্দ্র থাকছে ২৭টি। অতিরিক্ত টিকাদান কেন্দ্র রাখা হয়েছে ৭৫টি।
জেলা সিভিল সার্জন অফিসের স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম সবুজের সঞ্চালনায় সভা উদ্বোধন করেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর।
সিভিল সার্জন বলেন, 'করোনাকালে সবার সহযোগিতায় আমরা কক্সবাজারকে তুলনামূলক নিরাপদ রাখতে পেরেছি। সরকারের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমদের তত্ত্বাবধানে হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পারায় এ সফলতা এসেছে।'
'পক্ষকালব্যাপী ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইনেও আমরা একই পদ্ধতি অবলম্বনে গুরুত্বারোপ করছি। প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মী এবং আগত অভিভাবকদের মাস্ক পরিদানের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে তাগাদা দেওয়া হয়েছে,' জানান তিনি।
আরও বলেন, 'অতীতে এ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৯৯ শতাংশ সফলতা পাওয়া গেছে। এবারও একইভাবে সফল হবে বলে আমরা আশাবাদী।'
'সামনে যেহেতু পর্যটক মৌসুম, কক্সবাজারে অনেক পর্যটক আসবেণ। পর্যটনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পর্যটন এলাকায় একাধিক স্পটে বুথ স্থাপন করে পর্যটকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার আওতায় আনা হবে। ভ্রমণকারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য,' বলেন সিভিল সার্জন।
ক্যাম্পেইন উপলক্ষে অবহিতকরণ অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত প্রেজেন্টেশনে সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার সৌনম বড়ুয়া বলেন, 'যেহেতু করোনাকাল চলছে, তাই এ ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুরা ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খেতে পারবে কি না, এ নিয়ে অনেকের মনে সংশয় কাজ করতে পারে। নির্দেশনা এসেছে, করোনা আক্রান্ত শিশুরাও ভিটামিন-এ ক্যাপসুল অনায়াসে খেতে পারবে। ক্যাম্পেইনের সফলতার জন্য ইতোমধ্যে ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে অবহিতকরণ কর্মশালার পাশাপাশি মাইকিং করা হচ্ছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।'